ক্রিপ্টোকারেন্সি বর্তমানে গোটা বিশ্বের একটি জনপ্রিয় বিনিয়োগ মাধ্যম হিসাবে পরিনিত হয়েছে ।ক্রিপ্টোকারেন্সি শব্দের আক্ষরিক অর্থ হল গোপন মুদ্রা।সমগ্র বিশ্বে ২২০০০ হাজারের বেশি ক্রিপ্টোকারেন্সি রয়েছে ।
শেয়ার বাজারের মতো ক্রিপ্টোকারেন্সি একটি সাইক্যালের মাধ্যমে চালিত হয়।তবে শেয়ার বাজারের থেকে ক্রিপ্টকারেন্সি অনেক বেশি Volatile ।ক্রিপ্টো ধীরে ধীরে গোটা বিশ্বে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে ।
ক্রিপ্টো সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলি আজকের ব্লগে আলোচনা করা হয়েছে ।
Table of Contents
কিভাবে ক্রিপ্টকারেন্সিতে বিনিয়োগ করা উচিত ?
ক্রিপ্টোতে ধীরে ধীরে বিনিয়োগ করা উচিত । এমন টাকা বিনিয়োগ করা উচিত যা ব্যাক্তিগত জীবনে প্রভাব না পড়ে ।
ক্রিপ্টোতে কখনই লোন নিয়ে বিনিয়োগ করা উচিত নয় ।
কিভাবে ক্রিপ্টোতে লাভবান হওয়া যাবে ?
ক্রিপ্টো খুব Volatile মার্কেট । সুতরাং বিনিয়োগে সুদুরপসারি লাভ পেতে চাইলে দীর্ঘ সময়ের (Long term) জন্য বিনিয়োগ করতে হবে ।
আপনার বিনিয়োগ একবারে না করে , কয়েকটি ধাপে বিনিয়োগ করুন ।
ধরুন আপনি ২ লক্ষ টাকা বিনিয়োগ করতে চাইছেন , তাহলে আপনি সবটাকা একেবারে বিনিয়োগ না করে তিন থেকে চার বারের কয়েকটি ধাপে ধাপে বিনিয়োগ করে ফেলুন ।
আপনি একজন ক্রিপ্টো নিবেশক হিসাবে মনে রাখবেন , ক্রিপ্টো মার্কেটের সঠিক সবোর্চ্চ এবং সর্বনিন্ম পয়েন্ট নির্ণয় করতে পারবেন না ,তবে তার কাছাকাছি সময়ে কেনাবেচা করতে পারবেন ।
আরো পড়ুন ক্রিপ্টোকারেন্সি কী?ক্রিপ্টোকারেন্সি সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ কিছু প্রশ্নোত্তর
ক্রিপ্টোতে বিনিয়োগের পূর্বে কি কি দেখা উচিত ?
ক্রিপ্টোতে বিনিয়োগের পূর্বে কয়েকটি জিনিস ভালো মত দেখে নেওয়া উচিত । সেগুলি হল-
i) White Paper – white paper এ সেই ক্রিপ্টো সম্পর্কে সমস্ত জিনিস বিস্তারিত লেখা থাকে। সুতরাং বিনিয়োগের পূর্বে white paper বিস্তারিত ভাবে পড়া উচিত ।
ii) Team – যেই কোম্পানি ক্রিপ্টো এনেছে তাদের পূর্বের তথ্য দেখা উচিত । যা দেখে অনুমান করা যাবে কয়েনটি জেনুইন নাকি স্ক্যাম ।
iii) Git hub update – ক্রিপ্টো ডেভলপাররা ক্রিপ্টো সম্পর্কে আপডেট দিয়ে থাকে ।আপনাকে দেখতে হবে তারা ক্রিপ্টো সম্পর্কে কি কি আপডেট দিচ্ছে ।
কয়েন সম্পর্কে সোশাল মিডিয়াতে কেমন অ্যাক্টিভ তা দেখতে হবে ।যত বেশি অ্যাক্টিভ থাকবে তত বেশি ফিউচার ডিমান্ডে যাবে ।
iv) Official website- অফিশিয়াল ওয়েবসাইট ভিজিট করলে তাদের ফিউচার প্ল্যান সম্পর্কে জানা যাবে ।
v) supply এর উপর নজর দেওয়া উচিত ।
vi) কতগুলো এক্সচেঞ্জে নথিভুক্ত আছে তা দেখতে হবে । যত বেশি এক্সচেঞ্জে নথিভুক্ত আছে তত বেশি চাহিদা সেই কয়েনের ।
vii) কয়েনের র্যাঙ্ক কেমন আছে তা দেখতে হবে ।
viii) একাধিক এক্সচেঞ্জে নথিভুক্ত থাকলে নজর দিতে হবে , একটি এক্সচেঞ্জে যাতে বেশি সাপ্লাই না থাকে ।
ক্রিপ্টোতে বিনিয়োগের জন্য টেকনিক্যাল অ্যানালাইসিস কিভাবে করব ?
ক্রিপ্টোতে শেয়ার বাজারের মতন লং টার্ম এবং ডে ট্রেডিং করা হয় ।টেকনিক্যাল আন্যালাইসিস দ্বারা ডে ট্রেডিং করা হয় , অন্যদিকে লং টার্মের জন্য কোন প্রাইস পয়েন্টে কেনা উচিত সেই সম্পর্কে ধারনা পাওয়া যাবে ।
টেকনিক্যাল আন্যালাইসিস করার সময় যে সব বিষয়ের উপর গুরুত্ব দেওয়া উচিত সেগুলি হল-
i) support পয়েন্টে বিনিয়োগের করা যায় ।
ii) 200 EMA কে বিনিয়োগের জন্য আদর্শ পয়েন্ট হিসাবে ধরা হয় ।
আরেকটি জিনিস মাথায় রাখতে হবে ক্রিপ্টোতে diversification খুব জরুরি ।
ক্রিপ্টোকারেন্সি কোন টেকনলজি দ্বারা চলে ?
ক্রিপ্টোকারেন্সি ক্রিপ্টগ্রাফি টেকনলজি দ্বারা চলে ।
Altcoins কী ?
বিটকইয়েন ছাড়া অন্যান্য যে কারেন্সি রয়েছে তাদের Altcoins বলে ।এই কয়েন মডিফাই করা যায় ।
Altcoin আন্যালাইসিস করার জন্য www.coinmarketcap.com এই ওয়েবসাইটটি ফলো করতে পারেন ।
এছাড়া কিছু মোবাইল অ্যাপ হল Blockfolio , Hodler , Delta .
এক্সচেঞ্জ কী ?
এক্সচেঞ্জ হল এক মাধ্যম যেখানে ক্রিপ্টো কেনাবেচা হয় ।
ভারতীয়রা কিভাবে ক্রিপ্টোতে বিনিয়োগ করবে ?
Fiat to crypto exchange –ভারতে বিনিয়োগের জন্য এই ক্রিপ্টো কাজে লাগে ।
Crypto to crypto exchange –আপনা্র কাছে যদি কোন ক্রিপ্টো থেকে থাকে, তার বিনিময়ে অন্য কোন ক্রিপ্টো কিনতে পারবেন ।
আরো পড়ুন Technical Indicator কী ? জনপ্রিয় 6 টি টেকনিক্যাল ইন্ডিকেটর সম্পর্কে জেনে নিন ।
ক্রিপ্টোতে বিনিয়োগের জন্য বিভিন্ন ধরনের প্ল্যাটফর্ম কী কী ?
ক্রিপ্টোতে বিনিয়োগের জন্য বিভিন্ন ধরনের প্ল্যাটফর্মগুলি হল –
i) Centralised crypto exchange(CEX) :-এই কোম্পানিগুলি প্রাইভেটলি নিয়ন্ত্রিত হয় ।তারা একটি প্ল্যাটফর্ম তৈরি করেছে যার দ্বারা পাবলিক ক্রিপ্টো কেনাবেচা করতে পারবেন।এর পুরো নিয়ন্ত্রন কোম্পানির কাছে থাকে ।
উদাহরন – Binance, Zebpay
ii) Decentralized crypto currency (DEX)- এই পদ্ধতিতে কোডিং দ্বারা এক্সচেঞ্জের সমস্ত প্রসেস পরিচালিত হয় ।
কাস্টমার সরাসরি তার ওয়ালেট (wallet) থেকে কেনাবেচা করতে পারে ।এটি পুরো অটোমেটিভ সিস্টেম ।
উদাহরন- etherdelta , idex
iii) Peer to peer exchange – এক্সচেঞ্জের সাথে কোন ব্যাঙ্ক ডিটেলস থাকে না । সরাসরি ইউজারের থেকে কেনাবেচা হয়।
উদাহরন- Wazirx, local bitcoins
iv)Instant swap exchange- একটি ক্রিপ্টোকারেন্সি থেকে অন্য ক্রিপ্টোকারেন্সি কেনাবেচা যায় ।
উদাহরন- Shapeshift, changelly
v) Hybrid exchange- Centralized & decentralized এই দুয়ের কম্বিনেশনে তৈরি হয় ।
আরো পড়ুন Technical Analysis কী ? জেনে নিন টেকনিক্যাল অ্যানালাইসিস করার বিভিন্ন প্রকার
wallet কী?
ওয়ালেট হল এমন একটি জায়গা যেখানে আপনার কেনা ক্রিপ্টো জমা থাকে ।ওয়ালেট কেনার প্রয়োজন হয় না ।
ওয়ালেট স্ক্যাম হয়ে থাকে এবং অনেক নকল ওয়ালেট থাকে , সেখান থেকে আপনাকে সতর্ক থাকতে হবে ।
ICO,IEO, IDO, STO পুরো অর্থ কী ?
ICO- পুরো অর্থ হল Initial Coin offering । কোন কোম্পানি মার্কেটে প্রথম কয়েন নিয়ে আসলে নিজের ওয়েবসাইট থেকে ডাইরেক্ট বিক্রয় করে , তাকেই ICO বলে ।
IEO- পুরো অর্থ initial exchange offering ।এক্সচেঞ্জ দ্বারা নতুন কয়েন বাজারে আসে ।
IDO- পুরো অর্থ initial dex offering । dex ব্লকচেইন দ্বারা কন্ট্রোল হয় ।এখানে ওয়েবসাইট কিংবা এক্সচেঞ্জ দ্বারা পরিচালিত হয় না ।
STO- security token offering , সরকারী নিয়ম মেনেই এক্সচেঞ্জে নথিভুক্ত হয় ।এই পদ্ধতি ব্লকচেইন টেকনলজি দ্বারা পরিচালিত হয় ।
Airdrops কাকে বলে ?
কোন কোম্পানি যখন নতুন নতুন কয়েন নিয়ে আসে , তখন ফ্রীতে কিছু কয়েন দেয় । এই ফ্রী কয়েনগুলোকে Airdrops বলে ।
ক্রিপ্টকারেন্সিতে বিনিয়োগের সময় কী কী সাবধানতা অবলম্বন করা উচিত ?
ক্রিপ্টোতে বিনিয়োগের পূর্বে কিছু সাবধানতা অবলম্বন করা উচিত –
◊ ক্রিপ্টো কেনার পর এক্সচেঞ্জে Hold করা যাবে না ।নিজের ওয়ালেটে রাখতে হবে ।
◊ প্রাইভেট কি ( private key) কারো সাথে শেয়ার করা যাবে না ।
◊ Two types Authentication দিয়ে রাখতে হবে ।
আজকের ব্লগে ক্রিপ্টো সম্পর্কে সাধারন কিছু ধারনা নিয়ে আলোচনা করা হল, যা আপনাদের ক্রিপ্টো সম্পর্কে একটি স্বচ্ছ ধারনা তৈরি করবে ।
আজকের ব্লগ পড়ে আপনাদের যদি ভালো লেগে থাকে তাহলে কমেন্ট করে জানাবেন এবং বন্ধু ও পরিবারের সদস্যদের সাথে শেয়ার করবেন ।
আপনি যদি শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ করতে চান তাহলে বিনামূল্যে ডিম্যাট অ্যাকাঊন্ট খুলুন – https://tinyurl.com/y38db6k9
সতর্কীকরণঃ আজকের ব্লগে যে সমস্ত উদাহরন ব্যবহার করা হয়েছে কেবলমাত্র শিক্ষামূলক উদ্দেশ্য এবং পাঠকের তথ্যের জন্য ।বিনিয়োগ সম্পর্কিত কোন সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে দয়া করে আপনার আর্থিক উপদেষ্টার সাথে পরামর্শ করুন ।
Hi, I’m Pritam Saha. I have a passion for stocks and have spent my last 6+ years learning about the stock market. My Blog focuses on idea & concepts that improve the skills of the investor to manage their own money.