You are currently viewing একজন সফল উদ্যোগকারী (entrepreneur) হতে চাইছেন । এই গুণাবলী নিজের মধ্যে রাখার চেষ্টা করুন।

একজন সফল উদ্যোগকারী (entrepreneur) হতে চাইছেন । এই গুণাবলী নিজের মধ্যে রাখার চেষ্টা করুন।

উদ্যোক্তা হতে চান এমন ব্যক্তির সংখ্যা এখন প্রচুর, কিন্তু শুরুটা করলেও তা সঠিক ভাবে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া সহজ হয় না। ইন্টারনেটের যুগে সোশ্যাল মিডিয়াকে কাজে লাগিয়ে বহু লোকেই সফল উদ্যোক্তা হিসেবে নিজেকে গড়তে পেরেছেন। কিন্তু অনেকেই আছেন যারা সেভাবে আর এগিয়ে যেতে পারেন নি।

উদ্যোক্তা বলতে আসলে কি বোঝায়? 

একজন উদ্যোক্তা হলেন এমন একজন ব্যক্তি যার নতুন সৃষ্টির প্রতি অনুরাগ রয়েছে, যার নিজস্ব কিছু ধারণা রয়েছে এবং সেই ধারণা অনুসরণ করার ক্ষমতা রয়েছে। উদ্যোক্তা হবে এমন একজন ব্যক্তি যার এমন কোন প্রয়োজন দেখার ক্ষমতা রয়েছে যা এর আগে কেউ কখনও অনুধাবন করতে পারেনি। উদ্যোগকারী এমন কেউ যিনি মানুষের এমন কোন প্রয়োজনে কাজে এসেছেন যা আগে বিদ্যমান ছিল না।

কিন্তু শুধু আইডিয়া থাকলেই হবে না, পাশাপাশি আপনার কিছু গুণাবলীও থাকতে হবে। নাহলে আপনার কাছে একটি একটি চমৎকার আইডিয়া থাকলেও তা আপনাকে সফল উদ্যোক্তা করার জন্য যথেষ্ট নয়।

এই আর্টিকেলে আমরা দেখে নেবো একজন সফল উদ্যোক্তা হতে গেলে ঠিক কি কি গুণাবলী থাকা প্রয়োজন। একবার মিলিয়ে নিন তো এই গুন গুলি আপনার মধ্যে আছে কিনা?

 সৃজনশীলতা

হাতের কাছে এমন অনেক সমস্যাই দেখতে পাবেন যার সমাধান এখনও উপলব্ধ নয়। যার সৃজনশীলতা আছে সে তার সৃজনী শক্তি দিয়েই সামান্য সমস্যার সমাধান করে ফেলতে সক্ষম। উদ্যোক্তাদের ক্ষেত্রেও এমন সৃজনশীলতা থাকা আবশ্যক। কেননা সৃজনশীলতা ছাড়া নতুন উদ্ভাবন সম্ভব নয়। সাধারণ সমস্যার অসাধারন সমাধান নিয়ে আসা সম্ভব কেবল সৃজনী শক্তির দ্বারা।

 ঝুঁকি নেওয়ার ক্ষমতা

একজন উদ্যোক্তার ঝুঁকি নেওয়ার মত গুণ থাকা অপরিহার্য। অজানাকে অন্বেষণ না করলে, ঝুঁকি না নিলে অনন্য কিছুর আবিষ্কার সম্ভব নয়। যেমন চিরাচরিত প্রথার বদলে নতুন পদ্ধতি ব্যবহার করাও একটি ঝুঁকি নেওয়া। নিজেদের যারা সফল উদ্যোক্তা হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে সমর্থ হয়েছে তারা সময় ও অর্থ বিনিয়োগের ক্ষেত্রে ঝুঁকি নিতে পিছপা হন না। তবে মনে রাখতে হবে এক্ষেত্রে উপযুক্ত ব্যাক আপ থাকা কিন্তু আবশ্যিক। এছাড়া কোন বিষয়ে ঝুঁকি নিচ্ছেন তার যথাযথ মূল্যায়ন করারও প্রয়োজন রয়েছে। পরিনতি না জেনে একজন ভালো উদ্যোক্তা কখনই ঝুঁকি নেবেন না।

 প্যাশন

একজন উদ্যোক্তা হিসেবে যে কাজ আপনি বেঁছে নিচ্ছেন, সে কাজের প্রতি আপনার প্যাশন থাকতে হবে। এমন কোন কাজ নিয়ে এগোতে যাবেন না, যা করতে আপনার ভালো লাগে না। যে কাজ আপনি ভালোবাসেন, যে কাজটি আপনার আবেগের জায়গায় রয়েছে তাকে বেঁছে নিন। কাজ করার সময় যেন তা আপনার উপভোগের বিষয় হয়, আপনি যেন সেই কাজে সর্বদাই অনুপ্রাণিত বোধ করেন। প্যাশন আমাদের অনুপ্রেরণা যোগায়। কাজের প্রতি প্যাশন হল সেই চালিকা শক্তি যা কাজটিকে আরো ভালো করার জন্য আপনার উদ্বুদ্ধ করে।

 প্ল্যানিং

“Nobody plans to fail but many fail to plan.” – এই বিখ্যাত কোটেশন টা নিশ্চয়ই আপনার অজানা নয়। সত্যিই তো, কোন মানুষই ব্যর্থতার জন্য প্ল্যান করেন না, কিন্তু প্ল্যানিং এর মধ্যেকার ভুল ত্রুটিই মানুষকে ব্যর্থতার দিকে ঠেলে দেয়। তাই ছোট উদ্যোক্তা হন কিংবা বড়, আপনার প্ল্যান কিন্তু হতে হবে একদম স্ক্রিপ্ট। প্ল্যানিং বা পরিকল্পনা আসলে সময়ের আগেই সমস্ত ব্যাপারটাকে একবার ছকে নেওয়া। এই মুহূর্তে আপনার কাছে যা যা রিসোর্স আছে তা সর্বোত্তম উপায়ে কাজে লাগিয়ে কিভাবে আপনি নিজের লক্ষ্যে পৌঁছবেন তার মোটামুটি একটা ব্লু প্রিন্ট তৈরি করে নিয়ে সেই মত এগিয়ে যাওয়া। এটি আপনার সাফল্যকে একটু একটু করে বুনতে সাহায্য করবে। যদি নিজেকে একজন সফল উদ্যোক্তা হিসেবে দেখতে চান তাহলে এই গুণ থাকা অপরিহার্য।

 পেশাদারিত্ব

পেশাদারিত্ব ছাড়া সংগঠন চালানো এবং এগিয়ে নিয়ে যাওয়া একপ্রকার অসম্ভব। ভালো উদ্যেক্তাদের মধ্যে পেশাদারিত্ব থাকতেই হবে। উদ্যোক্তার আচার- ব্যবহার, কর্মচারী ও গ্রাহকদের সঙ্গে ব্যবহার প্রতিষ্ঠানের পরিবেশ তৈরি করতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন  করে। নির্ভরযোগ্যতা, শৃঙ্খলার মত বিষয়গুলিও পেশাদারিত্বের আওতায় আসে। উদ্যোক্তার সঙ্গে কর্মীদের বিশ্বাস ও নির্ভরযোগ্যতার সম্পর্ক তৈরি হলে তবেই কর্মীরা নিজেদের সেরাটা সংস্থার জন্য দিতে প্রস্তুত হয় এবং সংস্থা নিজ লক্ষে এগিয়ে যেতে পারে। 

 জ্ঞান

জ্ঞান সাফল্যের চাবিকাঠি। উদ্যোক্তা হিসেবে আপনি যেদিকে এগোতে চাইছেন, তার সবটা না হলেও অনেকটা জ্ঞান আপনার মধ্যে থাকতে হবে। না থাকলে আগে জেনে নিন, তারপর এগোবেন। কি করে বাজারের প্রতিযোগিতার মধ্যে এগিয়ে যাবেন, পরিবর্তিত প্রয়োজনীয়তার সঙ্গে তাল মিলিয়ে কি করে পণ্য বা সার্ভিস দেবেন, তার জন্য আপনাকে জ্ঞান বাড়াতে হবে। একজন ভালো উদ্যোক্তা হতে গেলে আপনাকে আজীবন একজন শিক্ষার্থী হতে হবে।

উন্মুক্ত ভাবনা, গ্রহণীয়তা

একজন ভালো উদ্যোক্তার মধ্যে উন্মুক্ত ভাবনা থাকা জরুরী। কোন দৃশ্যপট বা ঘটনা হয়ত একটি দুর্দান্ত সুযোগ হতে পারে। কিন্তু তা উপলব্ধি করার ক্ষমতা উদ্যোক্তার মধ্যে থাকতে হবে। ক্ষতি বা ব্যর্থতাকে ইতিবাচক ভাবে দেখতে হবে। অন্যথায় তার সঙ্গে মোকাবিলা করে উঠতে পারবেন না। মনে রাখবেন পৃথিবীতে এমন কোন উদ্যোক্তা নেই যিনি জীবনে কখনও কোন ব্যর্থতার সম্মুখিন হননি। দোষ ত্রুটিকে খোলা মনে বিনয়ের সঙ্গে বিবেচনা করুন। ভালো উদ্যোক্তা হিসেবে ব্যর্থতা থেকে শিক্ষা নিয়ে এগিয়ে যাওয়ার মানসিকতা তৈরি করুন। সফল আপনিই হবেন।

এমন নয় যে এই গুন গুলির সবকটি আপনার মধ্যে থাকতেই হবে। যে কোন ক্ষেত্রেই সাফল্য অনেক বেশি পরিশ্রম সাপেক্ষ এবং কিছুটা ভাগ্য দ্বারা নির্ধারিত হয়। গুনগুলি থাকলে তা আপনাকে আরেকটু ভালো এগিয়ে যেতে সহায়তা করবে। কিন্তু বেশিটাই নির্ভরশীল আপনার পরিশ্রমের উপর।

আরো পড়ুন –

আপনার সন্তানের সুরক্ষিত ভবিষ্যতের জন্য বিনিয়োগ নিয়ে ভাবছেন। দেখে নিন 5টি বিনিয়োগ পরিকল্পনা

শেয়ার বাজারে টাকা হারানো লোকের সংখ্যা প্রায় ৯০ শতাংশ। কিন্তু কেন?

মহাবিশ্বের সব চাইতে শক্তিশালী সিক্রেট জানতে চান। তাহলে আজকের বাংলায় বুক সামারি পড়ুন

জেনে নিন SEBI সম্পর্কে কিছু জরুরী তথ্য। কি তাদের উদ্দেশ্য। কাজই বা কি?

Leave a Reply