দ্য মিলিওনেইয়ার নেক্সট ডোর
বহু মানুষই স্বপ্ন দেখেন ধনী হওয়ার এবং বিলাসবহুল জীবনযাপন করার। কিন্তু “কোটিপতি”, অথবা “ধনী” এই শব্দগুলি শুনলে প্রথমেই আমাদের মাথায় আসে বিলাসবহুল বাড়ি, গাড়ী, ব্র্যান্ডেড জামাকাপড় ইত্যাদি। কিন্তু দ্য মিলিওনেয়ার নেক্সট ডোর বইটিতে লেখক থমাস স্ট্যানলি এবং উইলিয়াম ডি ড্যাঙ্ক এমন ধনী ব্যক্তিদের সম্পর্কে বলেছেন যারা আপনার আশেপাশেই রয়েছে আর আপনি হয়তো জানেনই না যে তারা কোটিপতি। যে কোন ব্যক্তিই ধনী হতে পারেন, যে কোন ব্যক্তিই সম্পদ তৈরি করতে পারেন, এমন সাহসী কিছু ধারনার সন্ধান আপনি এই বইয়ে পাবেন। প্রকৃতই ধনী হওয়ার খুব প্র্যাকটিকাল কিছু ধারণা সম্পর্কে এখানে আপনি জানতে পারবেন। আমরা বইটির মূল ধারণাগুলি এই আর্টিকেলে আপনাদের সঙ্গে ভাগ করে নেওয়ার চেষ্টা করব।
-
ধনী মানেই বিলাসিতা- এই ধারণা সঠিক নয়
ধনী ব্যক্তি মানেই যে তারা ভীষণ বিলাসবহুল জীবনযাপন করবেন এমনটা সবসময় সঠিক নাও হতে পারে। এমন বহু কোটিপতি মানুষ আছেন যারা প্রকৃতই ধনী অথচ তাদের জীবনযাত্রা অত্যন্ত ছিমছাম। ধনী বলেই যে তাদের বেহিসেবি খরচ করতে হবে এমন নয়, কেউ কেউ অনেক বিবেচনা করে বাজেট ঠিক করে থাকেন। আপনি যদি কোটিপতি হতেন তাহলে আপনি কি করতেন? নিশ্চয়ই বড়ো বাড়ি, বড়ো গাড়ী, দামী পোশাক এসবের পেছনে ব্যয় করার কথা ভাবতেন। কিন্তু এই বইয়ে আমরা এমন অনেক কোটিপতি ব্যক্তিদের কথা জানতে পারব যারা বিলাসবহুল জীবনযাপন না করেও সন্তুষ্ট। আপনিও যদি একজন প্রকৃতই ধনী ব্যক্তি হতে চান তাহলে আপনাকেও দায়বদ্ধতার সঙ্গে সঞ্ছয়ের কৌশল শিখতে হবে। পাশাপাশি অপ্রয়োজনীয় জিনিসে ব্যয় নিয়ন্ত্রণ করা, পরিকল্পপনা করে খরচ করা ইত্যাদির প্রতিও আপনাকে মনোযোগী হতে হবে। শুধুমাত্র সমৃদ্ধি নয়, বাজেট নিয়ন্ত্রণ করাও আপনাকে জানতে হবে। তবেই আপনার মিলিওনেয়ার হওয়ার স্বপ্ন সফল হবে।
আরো পড়ুন –রিচ ড্যাড পুওর ড্যাড :রবার্ট টি কিয়োসাকি
-
আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী হওয়াকে গুরুত্ব দিতে হবে
বাস্তবে কোটিপতি ব্যক্তিরা বিলাসবহুল গাড়ীর চাইতে আর্থিক স্বাধীনতা নিয়ে বেশি চিন্তিত। কেননা সামাজিক অবস্থানের তুলনায় তাদের কাছে আর্থিক স্বাধীনতা অধিক গুরুত্বপূর্ণ। আর্থিক স্বাধীনতা বলতে স্বাধীনভাবে অর্থ পরিচালনাকে বোঝান হয়েছে। দেখা গেছে একই আয়ের দুজন ব্যক্তির মধ্যে যিনি আর্থিক ভাবে যত বেশি স্বাধীন তিনি তত বেশি সুখী। এখন আপনি যেভাবে জীবনযাপন করছেন, অবসরের পরেও আপনি যদি তা চালিয়ে নিয়ে যেতে চান তাহলে তার প্রস্তুতি আপনাকে এখন থেকেই শুরু করতে হবে যাতে ভবিষ্যতে আর্থিক সঙ্কটকে এড়িয়ে যেতে সক্ষম হন। আপনার ভবিষ্যৎ সুনিশ্চিত করতে আর্থিক সুরক্ষার কথা ভাবতেই হবে।
-
হতে হবে অভিজ্ঞ বিনিয়োগকারী
যথাযথ না জেনে বিনিয়োগ করা একেবারেই বুদ্ধিমানের কাজ নয়। ধনী ব্যক্তিরাও এমনটাই করে থাকেন। তারা যতটুকু বিষয়ে জানেন তার উপর ভিত্তি করেই বিনিয়োগ করেন। তাই আপনি নিজেকে একজন কোটিপতি হিসেবে দেখতে চাইলে আপনাকেও তা মেনে চলতে হবে। ভেবেচিন্তে তবেই খরচ করবেন। ব্যবসার পাশাপাশি পরিবারের প্রয়োজন ও চিকিৎসার জন্য সঠিক প্ল্যানিং করতে হবে। আপাতভাবে কোন কোন ক্ষেত্রে ধনী ব্যক্তিদের কৃপণ মনে হলেও বিনিয়োগ বা পরিবারের চিকিৎসার মত ব্যাপারে অর্থ ব্যয় তাদের কাছে কোন সমস্যা হয়ে দাঁড়ায় না। প্রকৃত ধনী হতে চাইলে আপনাকে BMW কেনার চাইতে কোন পণ্য বা স্টকে বিনিয়োগ করার কথা বিবেচনা করতে হবে। কেননা পন্য বা স্টক পরবর্তীতে আপনাকে আরো বেশি সম্পদ উৎপাদনে সহায়তা করবে।
আরো পড়ুন –Angel One অ্যাপের সাহায্য বিনামূল্যে ডিম্যাট অ্যাকাউন্ট খুলুন, পাবেন ছাড়
-
সময়, শ্রম এবং অর্থের সঠিক ব্যবহার আয়ত্ত করুন
কোটিপতিরা তাদের অর্থ এমন জায়গায় ব্যয় করে থাকেন যা থেকে তারা আরো বেশি সম্পদ তৈরি করতে পারবেন। একই নীতি কিন্তু সময় ব্যয় করার ক্ষেত্রেও খাটাতে হবে। যখন অর্থ ব্যয় করার কথা আসে, আপনি হয়তো একটি গাড়ী বা পোশাকের জন্য ব্যয় করতে আগ্রহী হবেন। কিন্তু একজন ধনকুবের আরো বেশি সম্পদ তৈরির উদ্দেশ্যে বিনিয়োগ করতে আগ্রহ দেখাবেন। যে কোন আর্থিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রেই আপনাকে যথাযথ শ্রম ও সময় ব্যয় করতে হবে। সময়, শ্রম এবং অর্থের সঠিক ব্যবহার আপানাকে ধনী হওয়ার জন্য আরো একধাপ এগিয়ে নিয়ে যাবে।
আরো পড়ুন – দ্য ইন্টেলিজেন্ট ইনভেস্টর: বেঞ্জামিন গ্রাহাম
-
সন্তানদেরও আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী করতে হবে
যে সমস্ত কোটিপতিদের কথা এই বইয়ে উল্লেখ করা হয়েছে, দেখা গেছে তাদের অধিকাংশের ছেলেমেয়েরাও স্বাবলম্বী। তাই পিতামাতা ধনী হলেই যে সন্তানদের উপার্জন করা থেকে দূরে সরিয়ে রেখে শুধুই তাদের আরামে জীবনযাপনের ব্যবস্থা করতে হবে, এমন ধারণা কিন্তু একেবারেই ভুল। তাই আপনি যদি ইতিমধ্যেই ধনী হয়ে উঠেছেন বা ধনী হতে শুরু করে থাকেন তাহলে সন্তানকেও স্বাবলম্বী হওয়ার শিক্ষা দিতে শুরু করুন। এমন কতকগুলি টিপস বইটিতে রয়েছে-
১. বাচ্চাদের কখনই বোঝাবেন না যে তাদের বাবা-মা ধনী, এতে তাদের মধ্যে অলস হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা বাড়তে পারে।
২. হিসেব করে খরচ করা, শৃঙ্খলা, নিয়মানুবর্তিতা এগুলো বাচ্চাদের শেখান, সে আপনি যত ধনীই হন না কেন।
৩. আপনার সন্তানদের মানুষ করার উপর জোর দিন। তাদেরকেও জীবনে সফল হওয়ার শিক্ষা দিন। শুধু আপনার সাফল্যের উপর নির্ভর করে বেঁচে থাকার মনোভাব যেন তাদের মধ্যে তৈরি না হয় সেদিকে খেয়াল রাখুন।
৪. শুধু অর্থই যেন সন্তানের জীবনের সর্বস্ব হয়ে না ওঠে। টাকা পয়সা ছাড়াও অনেক মুল্যবান জিনিস আছে, এই ধারণা তাদের মধ্যে তৈরি হওয়ার সুযোগ করে দিন।
Hi, I’m Pritam Saha. I have a passion for stocks and have spent my last 6+ years learning about the stock market. My Blog focuses on idea & concepts that improve the skills of the investor to manage their own money.