You are currently viewing বীমা কি । কেন করবেন বীমা?

বীমা কি । কেন করবেন বীমা?

বীমাকারী কোম্পানি এবং বীমাকৃত ব্যক্তির মধ্যে বিশেষ আইনি চুক্তি হল বীমা। জীবন, স্বাস্থ্য বা সম্পদ, কোন কিছুই একেবারে ঝুঁকিমুক্ত নয়। আগামীকাল কি ঘটতে চলেছে তা আমরা কেউই সুনিশ্চিত করে বলতে পারি না। আর এই ঝুঁকি মোকাবিলার জন্যই বীমার প্রচলন। আর্থিক সঙ্কট হাত থেকে নিজেকে এবং পরিবারকে সুরক্ষিত রাখার একটি উপায় হল বীমা। প্রথম বীমা শুরু হয় ১৩০০ শতাব্দীতে। ভারতবর্ষে প্রাতিষ্ঠানিক ভাবে এর প্রারম্ভ আরো অনেক পরে, ১৮১৮ সালে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বীমার ধরণেরও অনেক পরিবর্তন হয়েছে। শুরুর দিকে সাধারণ বীমা ও জীবন বীমাই উপলব্ধ ছিল। এখন আরো ভিন্ন ভিন্ন ধরণের বীমা বাজারে রয়েছে। 

কোন কোন ধরণের বীমা করা যেতে পারে ?

জীবন বীমা

  যদি আপনি পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারী ব্যক্তি হয়ে থাকেন তাহলে পরিবার আপনার আয়ের উপর ভীষণভাবে নির্ভরশীল। কোন কারণে পরিবারের একক উপার্জনকারী ব্যক্তির অকাল প্রয়াণে যাতে পরিবারের অন্য সদস্যদের সমস্যায় পড়তে না হয় সেজন্য জীবন বীমা উপকারী। .

স্বাস্থ্য বীমা

সুচিকিৎসা এখন অনেক বেশি ব্যয়বহুল। অসুখ বিসুখে চিকিৎসার খরচ মেটানোর জন্য স্বাস্থ্য বীমা করা হয়। এক্ষেত্রে নির্দিষ্ট কোন রগের জন্যেও পলিসি কেনা যেতে পারে। এই বীমা সাধারণত হাসপাতাল ও ওষুধের খরচের কভারেজ দিয়ে থাকে। 

আরো পড়ুন – সঠিক Health Insurance কিভাবে পছন্দ করবেন?

গাড়ীর জন্য বীমা

  যানবাহনের যে কোন দুর্ঘটনার ক্ষতি থেকে গাড়ী বীমা আপনাকে সুরক্ষা প্রদান করবে। এটি যেমন আপনার গাড়ীর জন্য ক্ষতিপূরণ দেয়, তেমনই তৃতীয় পক্ষের ক্ষতিপূরণের দায়ও নেয়। অর্থাৎ যেখানে আপনাকে  অন্য কোন গাড়ীর মালিককে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে সেখানে আপনার বীমা সেই ক্ষতিপূরণ দিয়ে দেবে। 

শিক্ষার জন্য বীমা

সন্তানের উচ্চ শিক্ষার জন্য আপনি বীমা ক্রয় করতে পারেন। চিকিৎসার মত উচ্চ শিক্ষাও একটি ব্যয়বহুল ক্ষেত্র। আপনার সন্তান প্রাপ্ত বয়স্ক হলে বীমা আপনাকে বড় অঙ্কের এককালীন অর্থ প্রদান করবে, যা আপনার সন্তানের উচ্চ শিক্ষার পথ সুগম করতে সহায়তা করবে। 

গৃহ বীমা

  1. গৃহ বীমা – যে বাড়ি আপনাকে ও আপনার পরিবারকে সব সময় নিরাপত্তা দিয়ে চলেছে, সেই বাড়িই যে কখনও ক্ষয়ক্ষতির মুখোমুখি হবে না তার কি কোন নিশ্চয়তা আছে? বন্যা বা ভুমিকম্পের মত যে কোন প্রাকৃতিক দুর্যোগ আপনার বাড়ির ক্ষতি করলে তা সামাল দিতে গৃহ বীমা করে রাখা যেতে পারে। 

কোন বীমা আপনার প্রয়োজন? কিভাবে বুঝবেন ?

কোন বীমা আপনি ক্রয় করবেন তা বুঝবেন কিভাবে? এটি সম্পূর্ণভাবে নির্ভর করে আপনার কতটা অর্থের প্রয়োজন তার উপরে। আবার আপনি নিজের আয় থেকে সরিয়ে রেখে ঠিক কতটা অর্থ প্রিমিয়াম হিসেবে দিতে সক্ষম সেদিক থেকেও বিচার করতে হবে। এছাড়া কতদিন পর্যন্ত আপনাকে প্রিমিয়াম দিয়ে যেতে হবে, সেসব ভালো করে দেখে নিয়ে তবেই পলিসি কিনতে হবে। ধরুন আপনি নিজের বার্ষিক আয়ের থেকে সেভিংস করতে পারছেন, তাহলে আপনি সেই অনুযায়ী পলিসি ক্রয় করুন। পলিসির অনেক জটিলতা থাকে। পলিসি কেনার সময় আপনাকে এগুলি ভালো ভাবে বুঝে নিতে হবে। 

বীমার সুবিধা কি কি ?

  1. সঙ্কটের সময় উপস্থিত হলে বীমা আর্থিক ক্ষয় ক্ষতি থেকে অনেকটা সুরক্ষা দিতে সক্ষম। 
  2. বীমা আপনাকে আশ্বস্ত করতে সক্ষম। বীমা পলিসিতে আপনার আয়ের একটি অংশ নিয়মিত হারে প্রদান করে ভবিষ্যতের জন্য আপনি নিশ্চিন্ত হতে পারবেন। কোন দুর্ঘটনা, অসুখ বা বিপদের সম্মুখীন হলে আপনাকে রক্ষা করার জন্য বীমা পলিসি আপনাকে আশ্বস্ত করতে পারে।
  3. পরিবারের উপার্জনক্ষম ব্যক্তির অকাল প্রয়াণ ঘটলে বীমা পলিসি পরিবারকে আর্থিক সহায়তা প্রদান করে থাকে। 
  4. বীমা থেকে আপনি ক্ষতিপূরণের সুবিধা পেতে পারবেন। যেমন ধরুন, যদি আপনার গৃহ বীমা অথবা গাড়ীর জন্য বীমা করা থাকে তাহলে আপনি বাড়ি বা গাড়ী কোন দুর্ঘটনার সম্মুখীন হলে বীমা আপনাকে ক্ষতিপূরণ দেয়। 
  5. অবসর জীবনে আর্থিক চিন্তামুক্ত হয়ে বাছতে কে না চায়? এক্ষেত্রে ও বীমা আপনার জন্য সাহায্যের হাত বাড়িয়েই রেখেছে। এখন থেকেই একটু একটু করে সঞ্চয় করতে থাকুন। অবসরের জীবন যাতে আর্থিক সঙ্কট মুক্ত হয়ে মসৃণভাবে কাটাতে পারেন সেজন্য আগে থেকেই বীমা করে রাখতে পারেন। 

 বীমা পলিসির কিছু অসুবিধাও রয়েছে

  1.  বীমা পলিসি কেনার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় অসুবিধা হল সময়। আপনি যত তাড়াতাড়ি বীমা কিনবেন আপনার টাকা ততই কম খরচ হবে। তাই কম বয়সেই বীমা ক্রয় করার চেষ্টা করুন। আপনার বয়স যত বাড়বে বীমার জন্য টাকার পরিমাণও ততই বাড়তে থাকবে।
  2.  বীমা করার সময় ভুয়ো কোম্পানি থেকে খুব সাবধান থাকতে হবে। বেসরকারি কোম্পানির থেকে বীমা কেনার আগে তাদের কাগজপত্র ভালোভাবে যাচাই করে নিন। যথেষ্ট খোঁজ খবর নিয়ে তবেই বীমা কিনুন। খুব বেশি লোভনীয় সুযোগ সুবিধা দেখে বীমা কেনার জন্য ঝাঁপিয়ে পড়বেন না। আপনাকে ঠকানোর জন্য অতিরিক্ত সুযোগ সুবিধাকেই ফাঁদ হিসেবে ব্যবহার করা হয়। 
  3. পলিসি করার আগে সব রকম নিয়মাবলী ভালোভাবে  খুঁটিয়ে পড়ে নিন। শর্তাবলীর জটিলতা ভালো ভাবে দেখে না নিলে অনেক সময়েই তা আপনার আর্থিক ক্ষতির কারণ হতে পারে। 

ভবিষ্যতের দিনগুলি আমাদের জন্য ঠিক কি নিয়ে অপেক্ষা করছে তা আমাদের সকলের কাছেই অজানা। এক্ষেত্রে বীমা আমাদের আর্থিক ক্ষয় ক্ষতির সঙ্গে মোকাবিলা করতে অনেকখানি সাহায্য করে থাকে। আপনার কিনে রাখা একটি খুব ছোট পলিসিও হয়তো দুঃসময়ে নিরাপত্তা দিতে পারে।  

আরো পড়ুন –

শেয়ার মার্কেট সম্পর্কে ভ্রান্ত কয়েকটি ধারণা । আপনিও কী এইসব ভাবছেন ?

শেয়ার বাজারে টাকা হারানো লোকের সংখ্যা প্রায় ৯০ শতাংশ। কিন্তু কেন?

মহাবিশ্বের সব চাইতে শক্তিশালী সিক্রেট জানতে চান। তাহলে আজকের বাংলায় বুক সামারি পড়ুন

বিনিয়োগে মেডিটেশনের ভূমিকা

SEBI কিভাবে আপনার টাকা সুরক্ষিত রাখে

Leave a Reply