সম্প্রতি ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাঙ্ক কর্তৃক ডিজিটাল কারেন্সি বা ই-রুপি লঞ্চ করা হয়েছে। আপাতত মুম্বাই, দিল্লি, বেঙ্গালুরু ও ভুবনেশ্বর- দেশের চারটি শহর এই পরিষেবা পেতে চলেছে। প্রচলিত পেপার নোটের পাশাপাশি এই টাকার দ্বারাও এখন থেকে লেনদেন করা যাবে। পেপার নোটের একটি উপযুক্ত বিকল্প সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়ার উদ্দেশ্যে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক এই পদক্ষেপ নিয়েছেন বলে জানা যাচ্ছে। নোটের সঙ্গে এর বিশেষ কোন পার্থক্য নেই। এটি কেবল পেপার নোটের ডিজিটাল ভার্সন মাত্র।
প্রথম ধাপে দেশের মোট চারটি শহরে এটি চালু করা হলেও ধীরে ধীরে তা অন্যান্য শহরেও চালু করার পরিকল্পনা রিজার্ভ ব্যাঙ্কের তরফে জানান হয়েছে। কিন্তু এই ডিজিটাল রুপি নিয়ে সাধারণ মানুষ এখনও বিভ্রান্ত, এটি কি আসলে ভারতীয় ক্রিপ্টোকারেন্সি? নাকি ক্রিপ্টোকারেন্সির সঙ্গে এর কোন পার্থক্য রয়েছে?
Table of Contents
ডিজিটাল কারেন্সি আসলে কি?
যে নগদ টাকা আপনি দোকান বাজারে জিনিসপত্র কেনাবেচার জন্য ব্যবহার করে থাকেন, সেই নগদ টাকার ডিজিটাল সংস্করণ হল এই মুদ্রা। অথবা এটিকে আপনি ডিজিটাল ক্যাশও বলতে পারেন। প্রথম পর্যায়ে খুচরো লেনদেনের জন্য এটি চালু করা হয়েছে। এক ব্যক্তি থেকে অন্য ব্যক্তি অথবা ব্যক্তি থেকে ব্যবসায়িক ক্ষেত্রের সঙ্গে লেনদেনের জন্য ই-রুপির ব্যবহার করা যাবে। এছাড়া ভবিষ্যতে বেসরকারি খাতেও এই লেনদেন করা যাবে। আর এই সম্পূর্ণ লেনদেনের বিষয়টি নিয়ন্ত্রণ করবে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া।
আপনার ফোন বা অন্য স্মার্ট ডিভাইসে এই ডিজিটাল মুদ্রার জমিয়ে রাখতে পারেন। ব্যাঙ্কের মারফত এই ডিজিটাল মুদ্রা আপনি পেতে পারবেন।
আজই আপনার ফ্রি ডিম্যাট অ্যাকাউন্ট ওপেন করুন- https://angel-one.onelink.me/Wjgr/rs5zt95w
কোন কোন ব্যাঙ্ক থেকে ডিজিটাল কারেন্সি পাবেন?
স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া, ICICI ব্যাঙ্ক, ইয়েস ব্যাঙ্ক এবং HDFC ফার্স্ট ব্যাঙ্ক, প্রাথমিক ভাবে এই চারটি ব্যাঙ্ক থেকে আপনি এই মুহূর্তে ডিজিটাল রুপি পাবেন। তবে এরপর ইউনিওন ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া, HDFC ব্যাঙ্ক, ব্যাঙ্ক অফ বরোদা, কোটাক মাহিন্দ্রা এই ব্যাঙ্কগুলিকেও যুক্ত করার কথা জানান হয়েছে।
ক্রিপ্টোকারেন্সির সঙ্গে ডিজিটাল কারেন্সি র তফাৎ কোথায়?
রিজার্ভ ব্যাঙ্ক কর্তৃক নিয়ে আসা ডিজিটাল রুপি ভারতীয় ক্রিপ্টোকারেন্সি কিনা তা নিয়ে বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন উঠছে। ডিজিটাল কারেন্সি ও ক্রিপ্টোকারেন্সি আদতে এক নয়। ক্রিপ্টোকারেন্সি হল এমন এক ধরণের লেনদেনের মাধ্যম যার নিয়ন্ত্রণ কোন একটি নির্দিষ্ট প্রতিষ্ঠান বা ব্যাঙ্কের হাতে নেই। এর লেনদেন হয়ে থাকে মূলত ব্লক চেইনের মাধ্যমে। ক্রিপ্টোকারেন্সির ব্যাপারে সঠিক ধারণা পেতে হলে তিনটি বিষয়ে আপনার ধারণা থাকা আবশ্যক- ডিসেন্ট্রালইজেশন, ব্লক চেইন এবং ক্রিপ্টোগ্রাফি।
ডিসেন্ট্রালইজেশন কথার অর্থ হল যার বিশেষ নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা নেই। অর্থাৎ কোন ব্যাঙ্ক বা সরকারি প্রতিষ্ঠান এটি নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে না।
ব্লক চেইন হল এক ধরণের ডিজিটাল লেজার। এই লেজারের এক্সেস কেবলমাত্র অনুমোদন প্রাপ্ত ব্যবহারকারীদেরই দেওয়া হয়ে থাকে। এই ব্লক চেইন লেনদেনের রেকর্ড রাখে এবং ক্রিপ্টোকারেন্সি পরিচালনার কাজটিও করে থাকে।
আর ক্রিপ্টোগ্রাফি হল বিশেষ এক ধরণের সাংকেতিক লেখা। শুধুমাত্র প্রাপক এই লেখার বার্তা পড়তে পারেন।
কিন্তু রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া কর্তৃক যে ডিজিটাল মুদ্রা বাজারে আনা হয়েছে, তার একটি সম্পূর্ণ কেন্দ্রীভূত মুদ্রা। এর পুরোটাই নিয়ন্ত্রণ করছে ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। সুতরাং এর বৈধতা এবং বিশ্বাসযোগ্যতা অনেক বেশি।
Open Free Demat account https://angel-one.onelink.me/Wjgr/rs5zt95w
ভারতে ডিজিটাল কারেন্সি র প্রয়োজনীয়তা কোথায়?
অন্যান্য ক্ষেত্রের মত লেনদেনের ব্যাপারেও ডিজিটাইজেশনের ভারতকে একধাপ এগিয়ে নিয়ে যেতে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের এই যুগান্তকারী পদক্ষেপ। খুচরো হোক বা পাইকারি, যে কোন প্রকার গ্রাহকদের জন্যই এই ই-রুপি একটি ২৪ ঘণ্টা লেনদেনের মাধ্যম হতে চলেছে। ই-রুপি দিয়ে লেনদেন করার জন্য গ্রাহককে কোন প্রকার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট কাউণ্ট খুলতে হবে না। এমনকি কোন আধার নম্বরের প্রয়োজনীয়তা ও নেই। ভারতীয় ক্রেতাদের জন্য বড় একটি সুবিধা হল কোন দালাল মারফত কেনাবেচা করার আর দরকার পড়বে না। সম্পূর্ণ লেনদেনের প্রক্রিয়াটি হবে রিয়েল টাইমে। ডিজিটাল রুপি আন্তর্জাতিক লেনদেনের ক্ষেত্রে বড় সুবিধা নিয়ে আসবে বলে আশা করা হচ্ছে।
অন্যান্য ভার্চুয়াল কারেন্সির মত এক্ষেত্রেও কি ৩০% কর বসানো হবে?
ভার্চুয়াল কারেন্সি যেমন বিটকয়েন, লাইটকয়েন, ইথেরিয়াম ইত্যাদির উপর রিজার্ভ ব্যাঙ্ক সাধারণত ৩০ শতাংশ কর বসিয়ে থাকে। তবে ডিজিটাল রুপির উপর কোন কর বসানো হচ্ছে না। ঠিক যেমন নগদ অর্থের ক্ষেত্রে কোন কর বসানো হয় না, তেমনই ডিজিটাল রুপির উপরেও কোন কর ধার্য করা হচ্ছে না বলেই জানা গেছে।
ক্রিপ্টোকারেন্সি নাকি ডিজিটাল কারেন্সি? আপনার জন্য উপযোগী কোনটি?
ডিজিটাল রুপি আসলে একটি আইনসম্মত টেন্ডার, যা কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক কর্তৃক ডিজিটাল ফর্মে আনা হয় এবং নগদ টাকার মূল্যের সঙ্গে এটি বিনিময়ের উপযোগী। ডিজিটাল রুপি রিজার্ভ ব্যাঙ্ক দ্বারা জারি করা এক ধরণের মুদ্রা হলেও এটিকে ক্রিপ্টোকারেন্সির সঙ্গে গুলিয়ে ফেললে চলবে না। ক্রিপ্টোকারেন্সির সঙ্গে এর সবচেয়ে বড় পার্থক্যই এখানে যে ক্রিপ্টোকারেন্সি একটি বিকেন্দ্রীকৃত সম্পদ আর অন্যদিকে ক্রিপ্টোকারেন্সি একটি কেন্দ্রীভূত মুদ্রা।
ক্রিপ্টোকারেন্সি ব্যবহারে গ্রাহকদের যে পরিমাণ ঝুঁকির সম্মুখীন হতে হয়, ডিজিটাল মুদ্রায় তার অনেকটাই কমিয়ে আনা সম্ভব। যেহেতু এটি রিজার্ভ ব্যাঙ্ক কর্তৃক নিয়ন্ত্রিত একটি মুদ্রা, তাই অন্যান্য ভার্চুয়াল মুদ্রার তুলনায় এটি অধিক মাত্রায় ভরসাযোগ্য বলেই বিশেষজ্ঞদের মত। সুতরাং বুঝতে পারছেন তো আপনার শহরেও এই পরিসেবা উপলব্ধ হতে আর খুব বেশি যে দেরি নেই।
আরো পড়ুন 👇👇
ভারতে কবে চালু হচ্ছে ডিজিটাল মুদ্রা?
Hi, I’m Pritam Saha. I have a passion for stocks and have spent my last 6+ years learning about the stock market. My Blog focuses on idea & concepts that improve the skills of the investor to manage their own money.
Pingback: বেসিক অফ ইনকাম ট্যাক্স - Share Bazar Blog