শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ করে রাতারাতি ধনী হওয়ার স্বপ্ন দেখে অনেকেই শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ করতে আসেন। আর তারপরেই ঘটে বিপত্তি। শেয়ার মার্কেটে বিনিয়োগ করা প্রায় ৯০ শতাংশ মানুষই তাদের টাকা হারান। মুনাফা করেন মাত্র ১০ শতাংশ লোক। কিন্তু কেন? এটার কি কোন রহস্য আছে? মোটেই নয়। একটু বুঝে শুনে বিনিয়োগ করতে পারলেই আপনিও নিজেকে এই ১০ শতাংশ লোকের মধ্যেই রাখতে পারবেন।
প্রথমত শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ করা মানেই কিন্তু হঠাৎ করে অনেক ধনী হয়ে যাওয়ার উপায় নয়। ঠিক যেমন অন্য ব্যবসার ক্ষেত্রে হয়, এখানেও তাই। আপনি যদি একটি ব্যবসায় বিনিয়োগ করেন, তাহলে কি তা আপনাকে রাতারাতি ধনী করে দিতে পারবে ? নিশ্চই না। আপনাকে ধৈর্য ধরতে হবে, পরিশ্রম করতে হবে, তারপর গিয়ে মুনাফা করতে পারবেন। শেয়ার বাজারও ঠিক তেমনই।
বাজার না বুঝেই বিনিয়োগ করে ফেলার ফলে অধিকাংশ লোকেরাই শেয়ার বাজারে এসে টাকা হারিয়ে ফেলেন। আজকের আর্টিকেলটি আপনাকে এই সম্পর্কে তথ্য দিতে লেখা হয়েছে।
Table of Contents
১) পর্যাপ্ত রিসার্চ না করে মার্কেটে বিনিয়োগ করতে আসা
শেয়ার বাজারে বিনিয়োগের পূর্বে আপনাকে যথেষ্ট পড়াশোনা করে তবেই বিনিয়োগ করতে হবে। অন্যথায় আপনারও নিজেকে সেই ৯০ শতাংশ লোকের মধ্যে দেখতে পাওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। যারা যথাযথ পড়াশোনা না করেই বিনিয়োগ বাজারে এসে পড়েন তারা বাজারে টিকে থাকতে পারেন না এবং খুব অল্প দিনের মধ্যেই টাকা হারাতে শুরু করেন।
প্রথমত আপনাকে বাজার সম্পর্কে জানতে হবে। বাজারের ব্যাপারগুলিকে আগে ভালো করে বুঝে নিতে হবে। এবার আসুন আপনি যে কোম্পানিতে বিনিয়োগ করতে চাইছেন, সেই ব্যাপারে। যে কোম্পানিতে আপনি বিনিয়োগ করবেন সেই কোম্পানি সম্পর্কে এক দফা পড়াশোনা আপনাকে করতে হবে। কিন্তু কি পড়াশোনা করবেন? আপনাকে দেখতে হবে কোম্পানির কোন খারাপ রেকর্ড রয়েছে কিনা? কোম্পানি আগে কখনও প্রতিশ্রুতির খেলাপ করেছে কিনা? কোম্পানির বিরুদ্ধে কোন মামলা নেই তো? এই মুহূর্তে কোম্পানির কোন ঋণ আছে কি? থাকলে তা কত? মোটামুটি আগামী ১৫ বছরে কি কোম্পানি সেই ঋণ পরিশোধ করতে সমর্থ?
আরো পড়ুন – আজই আপনি আপনার ফ্রি ডিম্যাট অ্যাকাউন্ট খুলুন ।
এই সমস্ত দিকগুলি বিচার করে তবেই বিনিয়োগ করুন। কোম্পানির ঋণের বিষয়টি অধিক গুরুত্ব দিয়ে বিচার করুন। অন্যান্য দিকগুলির পাশাপাশি কোম্পানির যদি আগামী ১৫ বছরের মধ্যে ঋণ পরিশোধের সামর্থ্য থাকে তাহলে সেই কোম্পানির শেয়ার ভালো শেয়ার হিসেবে বিবেচনা করা যেতে পারে।
২) বন্ধু- বান্ধব বা পরিচিত কারোর সুপারিশে শেয়ার কেনা
বন্ধু- বান্ধব, আত্মীয় বা পরিচিত কোন ব্যক্তির কোথায় শেয়ার কিনেছেন এমন অনেক লোকের উপস্থিতি শেয়ার বাজারে আপনি দেখতে পাবেন। অনেকেই মনে করেন শেয়ার বাজারে বিনিয়োগের জন্য বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া মানে বাড়তি খরচ ছাড়া আর কিছুই নয়। তাই তারা পরিচিত যে কোন ব্যক্তির পরামর্শে শেয়ার কিনে ফেলেন এবং টাকা হারান। ফল স্বরূপ শেয়ার বাজার থেকে তারা আস্থা হারিয়ে ফেলেন।
আগে বিষয়টি যুক্তি দিয়ে বিচার করে দেখুন। ধরুন আপনার খুব কাছের কোন আত্মীয় X নামক কোন কোম্পানির শেয়ার কিনেছেন এবং ভালো মুনাফা অর্জন করেছেন। তাকে অনুকরণ করে আপনিও উক্ত কোম্পানির শেয়ার কিনে ফেললেন এবং কোম্পানি যাচাই করার প্রয়োজন মনে করলেন না। এখন দেখছেন আপনি শেয়ার কেনার কিছুদিন পর থেকেই সেই কোম্পানির শেয়ারের দাম পড়তে শুরু করে দিল। আর আপনি শেয়ার বাজারের উপর ভরসা হারিয়ে ফেললেন।
৩) কারোর কথায় নয়, নিজে যাচাই করে তবেই শেয়ার কিনুন।
“AN IDIOT WITH A PLAN CAN BEAT A GENIUS WITHOUT A PLAN”
সঠিক পরিকল্পনা নিয়ে তবেই যে কোন কাজ করা প্রয়োজন। নাহলে সঠিক পরিকল্পনা নিয়ে যে কোন বোকা মানুষও আপনাকে টপকে যেতে পারে, সে আপনি যত বুদ্ধিমানই হয়ে থাকুন না কেন। তাই বিনিয়োগের আগে প্ল্যান করুন। আপনার হাতে উদ্বৃত্ত টাকা আছে বলেই শেয়ার বাজারে টাকা লাগিয়ে দিলেন, এমন যেন না হয়। আবার সব টাকাই এক জায়গায় বিনিয়োগ করবেন না। লোকসান হলে সবটার উপরেই হবে। আপনার কষ্টের রোজগারে অর্জিত টাকা ভাগ করে নিন। কয়েকটি ভিন্ন জায়গায় ভিন্ন সময়ে বিনিয়োগ করুন।
৪) বিনিয়োগ করতে হলে ধৈর্য রাখতে হবে
শেয়ার বাজারে টিকে থাকার জন্য ধৈর্যের কোন বিকল্পই নেই। শেয়ার বাজারে দীর্ঘ সময়ের জন্য বিনিয়োগ করলে তবেই আশানুরুপ ফলাফল লাভ করা যায়। যে পরিমাণ টাকা আপনি দীর্ঘ সময় ধরে লগ্নি রাখতে পারবেন কেবল সেই পরিমাণ টাকাই শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ করুন। আপনার জরুরী পরিস্থিতির জন্য আলাদা পুঁজির ব্যবস্থা রাখুন।
অনেক সময় দেখা যায় শেয়ার বাজার নিম্নমুখী হলে অনেক বিনিয়োগকারী ভয় পেয়ে দ্রুত শেয়ার ছেড়ে দেন। আর এখানেই পটু বিনিয়োগকারীরা আপনার থেকে এগিয়ে রয়েছেন। তারা সহজে ধৈর্য হারিয়ে ফেলেন না এবং দীর্ঘ সময় ধরে টাকা খাটিয়ে যান। ফলে তারা ভালো অঙ্কের রিটার্ন লাভ করেন।
শেয়ার মার্কেটে বিনিয়োগের একাধিক কৌশল রয়েছে। কোন রাস্তায় আপনি বিনিয়োগ করতে আগ্রহী তা নিজেকে আগে ঠিক করে নিতে হবে। ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের বেশিরভাগই যে কোন ব্যক্তির দ্বারা প্রভাবিত হয়ে মার্কেটে আসেন। এবং পর্যাপ্ত গবেষণার অভাবে টাকা হারান। পরিসংখ্যান তেমনই তথ্য দেয়।
আশা করি এই আর্টিকেলটি কিছুটা হলেও আপনাকে বিনিয়োগকারী হিসেবে সেই ১০ শতাংশ লোকের মধ্যে রাখতে সহায়তা করবে।
আরো পড়ুন –
Berkshire Hathaway।বার্কশায়ার হ্যাথাওয়ে
স্টক মার্কেটের 25 টি গুরুত্বপূর্ন পরিভাষা
কিভাবে কোন কোম্পানির বার্ষিক প্রতিবেদন পড়তে হয় । How to read annual report of a company
Angel One অ্যাপের সাহায্য বিনামূল্যে ডিম্যাট অ্যাকাউন্ট খুলুন, পাবেন ছাড়
Hi, I’m Pritam Saha. I have a passion for stocks and have spent my last 6+ years learning about the stock market. My Blog focuses on idea & concepts that improve the skills of the investor to manage their own money.
Pingback: একজন সফল উদ্যোগকারী (entrepreneur) হতে চাইছেন । এই গুণাবলী নিজের মধ্যে রাখার চেষ্টা করুন। - Share Bazar Blog
Pingback: জেনে নিন SEBI সম্পর্কে কিছু জরুরী তথ্য। কি তাদের উদ্দেশ্য। কাজই বা কি? - Share Bazar Blog
Pingback: নতুন বছর ২০২৩ উপলব্ধ সেরা গাড়ীর লোন - Share Bazar Blog