You are currently viewing সিকিওরিটি অ্যানালিসিস: বেঞ্জামিন গ্রাহাম ও ডেভিড ডড

সিকিওরিটি অ্যানালিসিস: বেঞ্জামিন গ্রাহাম ও ডেভিড ডড

আজকের অ্যাটিকেলে বেঞ্জামিন গ্রাহামের লেখা সিকিওরিটি অ্যানালাইসিস ব‌ইয়ের গুরুত্বপূর্ণ লেসন সংক্ষিপ্তাকারে আলোচনা করা হয়েছে। আজকের অ্যাটিক্যালটি পড়ে আপনাদের ভালো লেগে থাকলে অবশ্যই শেয়ার করে সকলকে পড়ার সুযোগ করে দিন।

একজন বিনিয়োগকারী সব সময়েই কমবেশি সিকিওরিটি (নিরাপত্তা) খুঁজে থাকেন। যেখানে বিনিয়োগ করলে বেশি নিরাপত্তা পাওয়া যাবে সেখানেই বিনিয়োগ করার প্রবণতা থাকা তো খুব স্বাভাবিক। আপনিও কি সিকিওরিটির সন্ধানে আছেন? সিকিওরিটি সম্পর্কে দু-এক কথা শুনবেন নাকি? তাও আবার খোদ সিকিওটির জনক বেঞ্জামিন গ্রাহামের থেকেই? তেমন হলে আপনি সঠিক আর্টিকেলই পড়তে শুরু করেছেন। 

সিকিওরিটি অ্যানালিসিস বইটি প্রথম প্রকাশিত হয় ১৯৩৪ সালে। লেখক বেঞ্জামিন গ্রাহাম এবং ডেভিড ডড। বিনিয়োগকারী হিসেবে নতুন হয়ে থাকলে বইটি পড়া আপনার জন্য একটু কঠিন ব্যাপার। তবে আমাদের আর্টিকেল থেকে মূল বিষয়গুলি আপনি আনায়াসেই জেনে নিতে পারবেন। 

কারা পড়বেন সিকিওরিটি অ্যানালিসিস বইটি? কেনই বা পড়বেন?

প্রথম প্রকাশের পর থেকে বইটির আরো অনেক সংস্করণ বাজারে এসেছে। বইটি যে আসলে কতখানি প্রাসঙ্গিক, বারংবার প্রকাশনাই তার সাক্ষ্য বহন করে। কিংবদন্তি ওয়ারেন বাফেট এই বইটিকে তার জন্য বাইবেল বলেছেন। 

বহু বিনিয়োগকারী বেঞ্জামিন গ্রাহাম এবং ডেভিড ডডের ভ্যালু ইনভেসটিং এর নীতির উপর ভিত্তি করে বিনিয়োগ করেছেন এবং নিজেরাই নিজেদের ভাগ্য নির্মাণ করেছেন। আপনি যদি এমন একজন বিনিয়োগকারী হয়ে থাকেন যিনি বিনিয়োগের ক্ষেত্রে আরো নৈপুণ্য আনতে চান তাহলে সিকিওরিটি অ্যানালিসিস পড়ার সুপারিশ আপনাকে করা যেতে পারে। 

সিকিওরিটি অ্যানালিসিসের মূল বিষয়বস্তু

সিকিওরিটি অ্যানালিসিস বইটিতে গ্রাহাম এবং ডড তিনটি মূল ধারনার রূপরেখা দিয়েছেন। এগুলি হল- 

স্পেকুলেশন এবং বিনিয়োগের পার্থক্য

কোম্পানির প্রকৃত উপার্জন জানা,

কিভাবে ব্যালেন্স শিট পড়ে কোম্পানি সম্পর্কে জানতে হবে,

মন্দার সময়ের কথা বিবেচনা করে বিনিয়োগ করা ।

  • স্পেকুলেশন এবং বিনিয়োগের পার্থক্য

অবাস্তব বৃদ্ধির সম্ভাবনার উপর ভিত্তি করে বহু মানুষকেই বিনিয়োগ করতে দেখা যায়। কিন্তু আসলে তারা বিনিয়োগ নয় বরং অপ্রয়োজনীয় ঝুঁকি নিয়ে থাকেন। একেই স্পেকুলেশন বলা হয়েছে। একজন বুদ্ধিমান বিনিয়োগকারী হিসেবে সিকিওরিটি কেনার আগে আপনাকে বিনিয়োগের আসল অর্থ জানতে হবে। অন্তত গ্রাহাম তার লেখনীতে এমনটাই উপদেশ দিয়েছেন। 

প্রথমেই উচ্চ রিটার্ন খোঁজ করা কখনই একজন ভালো বিনিয়োগকারীর লক্ষন নয়। এটিও স্পেকুলেশন। যদি আপনি নিজেকে একজন ভালো বিনিয়োগকারী হিসেবে দেখতে চান, তাহলে আপনার প্রথম পদক্ষেপ হবে আপনার মূলধন রক্ষা করা এবং তারপর একটি গ্রহণযোগ্য রিটার্নের খোঁজ করা। এরপর আপনার কাজ হবে উক্ত বিনিয়োগের সঙ্গে যে ঝুঁকির সম্ভাবনা আছে সেটি আদৌ যুক্তিসঙ্গত কিনা তা বিবেচনা করে দেখা। 

আবার প্রাথমিক ভাবে স্টকের পরিবর্তে অনেকে বন্ডে বিনিয়োগের দিকে আগ্রহ দেখান। কেননা এখানে স্থির আয়ের সিকিওরিটি আছে। তবে এর মানে কখনই এমন নয় যে স্টকে বিনিয়োগ করবেন না। কোন কোম্পানির স্টক কেনার আগে কোম্পানির ব্যাপারে যথাযথ রিসার্চ আপনাকে করে নিতে হবে। কোম্পানির বিগত ১০ বছরের আর্থিক বিবৃতিকে খুব ভালো করে বিচার বিশ্লেষণ করে দেখে নিন। 

একজন স্পেকুলেটর আশা করেন যে ভবিষ্যতে বাজার সব সময়েই ঊর্ধ্বমুখী হবে। কিন্তু একজন ভালো বিনিয়োগকারী রিটার্নের পাশাপাশি সম্ভাব্য ঝুঁকির কথাও মাথায় রাখেন। 

আরো পড়ুন – ইন্টেলিজেন্ট ইনভেস্টর: বেঞ্জামিন গ্রাহাম

আর্থিক বিবৃতি থেকে কোম্পানির প্রকৃত উপার্জন জানা

কোম্পানির আর্থিক বিবৃতি কিভাবে পড়তে হবে তা একজন নবীন বিনিয়োগকারী এই বই থেকে শিখতে পারবেন। সিকিওরিটি অ্যানালিসিসে আর্থিক বিবৃতি পড়ার উপর বিশেষ জোর দেওয়া হয়েছে। এক্ষেত্রে কোম্পানির বিগত ১০ বছরের ইতিহাস একটি ভালো উপায় হতে পারে। তবে এক্ষেত্রে প্রায়শই হয়ে থাকে এমন একটি সাধারণ ভুলের কথাও সিকিওরিটি অ্যানালিসিসে বলা হয়েছে।

ধরুন কোন স্টকের প্রতি বছর শেয়ার প্রতি আয় ১ ডলার বৃদ্ধি পেয়েছে। বিগত কয়েক বছর ধরে এমনটা হয়েছে বলেই যে আগামী বছরগুলোতেও এটি বজায় থাকবে তা কিন্তু নাও হতে পারে। 

সেরা কোম্পানি খারাপ সময়ে অর্থ হারাতে পারে আবার খারাপ কোম্পানিও লাভজনক হতে পারে। ভবিষ্যৎ আয় বুঝতে হলে আপনাকে ব্যবসার ধারণা বুঝতে হবে।

কিভাবে আর্দশ অভিভাবক হয়ে উঠবেন জানতে ভিজিট করুন 👉 http://www.parrenting.com

কিভাবে ব্যালেন্স শিট পড়ে কোম্পানি সম্পর্কে জানতে হবে

ব্যালেন্স শিট পর্যালোচনা করে কোম্পানির ব্যাপারে বেশ কিছুটা জানা যায়। তবে কোম্পানি সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা যদি তৈরি করতে চান তাহলে আপনাকে ভিন্ন ভিন্ন ফিনান্সিয়াল স্টেটমেন্ট বিশ্লেষণ করে দেখতে হবে। এক্ষেত্রে শুধুমাত্র ব্যালেন্স শিট যথেষ্ট নয়। আর ব্যালেন্স শিট দেখার সময় খেয়াল করতে হবে তা যেন কোম্পানির আর্থিক দুর্বলতাকে লুকিয়ে না রাখে। যেমন ধরুন, কোম্পানির যে সব স্বল্পমেয়াদী লাইবিলিটি (liability) আছে সেগুলো তারা নগদ অর্থ দিয়ে শোধ করতে সমর্থ কিনা। 

আরো পড়ুন – প্রাইস অ্যাকশন স্ট্যাটেজি ফুল কোর্স বিনামূল্যে

মন্দার সময়ের কথা বিবেচনা করে বিনিয়োগ করা

বাজার অনুকুল থাকাকালীন বিনিয়োগ থেকে ভালো রিটার্ন আসবে। কিন্তু শুধু তা দেখলেই চলবে না। মন্দার সময়ে আপনার বিনিয়োগ করা অর্থ কতটা নিরাপদ সেটিও বিবেচনা করে দেখতে হবে। গ্রাহাম ও ডড তাদের বইয়ে এমনটাই পরামর্শ দিয়েছেন। কিভাবে আপনার সিকিওরিটিগুলিকে মন্দার প্রভাব থেকে মুক্ত রাখতে পারবেন সে বিষয়ে গ্রাহাম এবং ডড উপায় বলে দিয়েছেন। যদি দেখেন বাজারে মন্দার সময় কোম্পানির ক্রয় ক্ষমতা সেভাবে কমে যায়নি তাহলে সেখানে ভরসা রাখতে পারেন। আবার যদি দেখা যায় যে সুদের কভারেজ খুব বেশি তাহলে সেক্ষেত্রেও আপনার বিনিয়োগ বিপদ থেকে দূরে থাকবে। 

বিনিয়োগ সম্পর্কে লেখা এখন পর্যন্ত সবচেয়ে ব্যাপক বিক্রিত বই এই সিকিওরিটি অ্যানালিসিস। এটি সর্বকালের বেস্ট সেলার বইগুলির মধ্যে অন্যতম একটি। ওয়ারেন বাফেট তার সাফল্যের পেছনে এই বইয়ের অবদানকে বারবার স্বীকার করেছেন ।

সিকিওরিটি অ্যানালাইসিস

আরো পড়ুন:-

মিউচুয়াল ফান্ড কী ?

বন্ড কী ?

শেয়ার মার্কেট সম্পর্কে ভ্রান্ত কয়েকটি ধারণা । আপনিও কী এইসব ভাবছেন ?

Leave a Reply