ETF ফান্ড হল এক ধরনের মিউচুয়াল ফান্ড যা নিয়মিত মিউচুয়াল ফান্ড বা ইনডেক্স ফান্ড থেকে আলাদা । ভারতবর্ষে প্রথম ইটিএফ ২০০১ সাল থেকে শুরু হয় ,সেই ফান্ডটির নাম Nifty 50 ETF Fund । ইটিএফ ফান্ড সম্পর্কে আরো বিস্তারিত জানতে নীচের অ্যাটিক্যালটি পড়ুন।
Table of Contents
ETF কী ?
ইটিএফ হল এক্সচেঞ্জ ট্রেডেড ফান্ড, যা সাধারন মিউচুয়াল ফান্ডের মত নয়।এটি স্টক এক্সচেঞ্জের একটি সাধারন স্টকের মত কেনাবেচা হয় ।
যা এক বা একাধিক স্টক বা সিকিউরিটিজের সম্বলিত একটি রুপ । ইটিএফ বেশ কয়েকজনের আর্থিক সম্পদ সংগ্রহ করে এবং এটি ব্যবহার করে বিভিন্ন ট্রেডিং যোগ্য আর্থিক সম্পদ যেমন শেয়ার, বন্ড ,গোল্ড , ঋনপত্র প্রভৃতিতে বিনিয়োগ করে । বেশিরভাগ ইটিএফ সেবি দ্বারা নিবন্ধিত ।শেয়ার বাজার সম্পর্কে সীমিত দক্ষতা সম্পন্ন বিনিয়োগকারীদের জন্য এটি একটি আকর্ষণীয় বিকল্প ।
একটি উদাহরন সহযোগে সমগ্র ইটিএফ বিষয়টি বোঝার চেষ্টা করি, আপনার পরিবার গঠন হয় অনেকজন সদস্য নিয়ে এখানে আপনার পরিবার হল ইটিএফ, আর এক একটি সদস্য হল স্টক বা সিকিউরিটিজ। এক একটি সদস্য নিয়ে যেমন একটি পরিবার গঠন হয় অনুরুপভাবে একধিক স্টক বা সিকিউরিটেজের সম্বলিত রুপ হল ইটিএফ ।
ETF কত প্রকার ?
ইটিএফ সাধারনত ৭ ধরনের হয়ে থাকে। যেমন –
2) Bond ETF
3) Gold ETF
4) Sector ETF
5) Currency ETF
কীভাবে ETF ফান্ডে বিনিয়োগ করবেন ?
ইটিএফ ফান্ডে বিনিয়োগ করা এবং স্টক মার্কেটে বিনিয়োগ করা একই রকম সুতরাং যদি আপনি শেয়ার বাজারে শেয়ার কিনতে জানেন ,তাহলে এটি সম্পর্কেও আপনি জানেন। ইটিএফ আন্যান্য স্টকের মতো স্টক ব্রোকারের মাধ্যমে লেনদেন করা যায় ।বাজারের চাহিদা এবং সরবরাহের উপর নির্ভর করে প্রতিটি ইটিএফের ইউনিট মূল্য নির্ধরন করা হয় ।ইটিএফ কেনাবেচার জন্য একটি ডিম্যাট অ্যাকাউন্ট এবং ট্রেডিং অ্যাকাউন্ট থাকা আবশ্যক।ইটিএফ ফান্ড সমস্ত প্রধান স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্ত করা হয় এবং ট্রেডিংয়ের সময় বিনিয়োগকারীর প্রয়োজনীয়তা আনুযায়ী কেনাবাচা করা যায় ।
আরো পড়ুন শেয়ার বাজারের সহজ পাঠ
ইটিএফ কিভাবে কাজ করে ?
ইটিএফ এমন একটি ফান্ড যার মধ্যে মিউচুয়াল ফান্ড এবং স্টক উভয়ের বৈশিষ্ট্য থাকে ।ইটিএফ একাধিক শেয়ারের সম্বলিত রুপ ।
ইটিএফ তহবিল সমস্ত প্রধান স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্ত করা হয় এবং ইকুইটি ট্রেডিংয়ের সময় প্রয়োজন অনুসারে কেনাবেচা করা যায় ।
ইটিএফের দাম ওঠানামা করে বাজারের চাহিদা অনুযায়ী। চাহিদা বেশি হলে দাম উপরে যাবে , চাহিদা কম হলে দাম নীচের দিকে যাবে ।এই ফান্ডে শেয়ার হোল্ডারদের লাভ্যাংশ নির্ভর করে কোম্পনির কর্মক্ষমতা এবং সম্পদ পরিচালনার উপর নির্ভর করে ।
কোম্পানির নিয়ম আনুসারে ফান্ডগুলি সক্রিয়ভাবে বা নিষ্ক্রিয়ভাবে পরিচালিত হতে পারে ।সক্রিয়ভাবে পরিচালিত ইটিএফগুলির পোর্টফোলিও ম্যানেজার দ্বারা পরিচালিত হ্য়,স্টক মার্কেটের অবস্থা মূল্যায়ন করার পর সম্ভবনা হলেই বিনিয়োগ করে ।
অন্যদিকে নিষ্ক্রিয়ভাবে পরিচালিত ইটিএফ নির্দিষ্ট বাজার সূচুককে অনুসরন করে,সূচকের অন্তর্গত সম্পদেই বিনিয়োগ করে ।
i)ইটিএফ একাধিক স্টক নিয়ে একটি ঝুড়ি তৈরি করে ।
ii) কোম্পানির শেয়ার কেনার মতো ,ঝুড়ির একটি অংশ কিনতে পারে ।
iii) বিনিয়োগকারীরা একটি স্টকের মতো সারাদিন ETF ট্রেড করতে পারবে ।
উদাহরনস্বরূপ – গোল্ড ইটিএফ মিনিমাম ১ ইউনিট করে ট্রেড করতে পারবেন, ১ ইউনিট সোনা প্রায় ৪৭০০ টাকায় কিনতে পারবেন । এটি দিনের সোনার দামের উপর ভিত্তি করে ওঠানামা করে ।
আরো পড়ুন ইনডেক্স ফান্ড কি এবং কিভাবে ইনডেক্স ফান্ডে বিনিয়োগ করবেন ?
ইটিএফ কেনার আগে কোন কোন বিষয়ের উপর গুরুত্ব দেওয়া উচিত ?
ইটিএফ কেনার আগে অন্তত চারটি বিষয়ের উপর গুরুত্ব দেওয়া উচিতঃ
INAV: INAV হল Indicate Net Asset Value । ইটিএফ কেনার আগে INAV চেক করে নেবেন। INAV এর আশেপাশে ইটিএফ ভ্যালু থাকলে তবেই কেনা উচিত ।INAV এর থেকে বেশি ভ্যালু দিয়ে কিনতে চাইলে সেটি আপনি প্রিমিয়াম দিয়ে কিনছেন ।
Tracking Error: ট্র্যাকিং এরর হল সূচকের রিটার্ন এবং ফান্ডের রিটার্নের মধ্যে পার্থক্য।যে ফান্ডের ট্র্যাকিং এরর কম সেই ফান্ড পছন্দ করুন ।
Liquidity: যেই ইটিএফ ফান্ডে লিক্যুইডিটি বেশি থাকবে সেই ফান্ড যেকোন সময় বিক্রি করার সুবিধা থাকবে ।সুতরাং যেই ফান্ডের লিক্যুইডিটি বেশি থাকবে সেই ফান্ড দেখে বিনিয়োগ করুন ।
Expense Ratio : ইটিএফ ফান্ডের লিক্যুইডিটি সাধারানত ০.০০৫% – ০.১% এর মধ্য থাকে। সুতরাং দেখে নিন কোন ফান্ডের খরচ খুব কম।
ইটিএফ ফান্ডের সুবিধাঃ
১) বৈচিত্রতা থাকে ।
২) খুব কম খরচ ।
৩)ট্রেডিং এবং ইনভেষ্ট এই দুটো করার সুযোগ থাকবে ।
৪)খুব সহজেই পছন্দ করা যায় ।
৫) ঝুঁকি খুব কম ।
ইটিএফ ফান্ডের অসুবিধাঃ
১) লিক্যুইডিটি কম থাকে ।
ইটিএফ ধারনাটি এখন বিভিন্ন দেশে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। ইটিএফ খুব লাভজনক একটি বিনিয়োগ মাধ্যম যদি আপনি একটু সতর্কতার সঙ্গে বিনিয়োগ করেন। আজকের অ্যাটিক্যালে সেই সম্পর্কেই আলোচনা করেছি তবুও যদি ইটিএফ সম্পর্কে আরো কিছু প্রশ্ন থেকে থাকে তাহলে অবশ্যই কমেন্ট করে জানান।
যদি আজকের অ্যাটিক্যালটি পড়ে সত্যি ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই কাছের মানুষদের সঙ্গে শেয়ার করবেন।
Hi, I’m Pritam Saha. I have a passion for stocks and have spent my last 6+ years learning about the stock market. My Blog focuses on idea & concepts that improve the skills of the investor to manage their own money.
Pingback: স্টক মার্কেটের 25 টি গুরত্বপূর্ন পরিভাষা - Share Bazar Blog
Pingback: Bond কাকে বলে ? জেনে নিন বিভিন্ন ধরনের বন্ডের প্রকার - Share Bazar Blog
Pingback: ক্রিপ্টোকারেন্সি কী?ক্রিপ্টোকারেন্সি সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ কিছু প্রশ্নোত্তর - Share Bazar Blog
Pingback: পোর্টফোলিও বৈচিত্র্যের জন্য আন্তর্জাতিক স্টকগুলিতে বিনিয়োগের সুবিধা - Share Bazar Blog