আজকের অ্যাটিক্যালে আমরা IPO সম্পর্কে জানবো । IPO শেয়ার বাজারে একটি বহুল প্রচলিত শব্দ এবং সেই সম্পর্কে নিবেষকদের মধ্যে বিভিন্ন ধরনের ধারনা রয়েছে ।যা নিবেষকদের বিভ্রান্ত করে, আজকের আলোচনার মাধ্যমে সেইসব বিভ্রান্তির অবসান হবে এই আশা করছি ।
IPO প্রসঙ্গ আসলেই মাথার মধ্যে অনেকগুলি প্রশ্নের ঘোরাফেরা শুরু হয়ে যায় । যেমন –
১) আইপিও আসলে কী ?
২) কোম্পানি কেন আইপিও নিয়ে আসে ?
৩) আইপিও কীভাবে কেনা যায় ?
৪)আইপিও কারা কেনার সুযোগ পায় ?
৫) আইপিও বিক্রি পদ্ধতি কাদের দ্বারা সম্পূর্ণ হয় ?
আমরা তাহলে আজকের আলোচনার মাধ্যেমে এই সমস্ত প্রশ্নের উত্তর খোঁজার চেষ্টা করবো এবং যা জানার মাধ্যমে আপনারা IPO সম্পর্কে একটি স্বচ্ছ ধারনা লাভ করবেন ।
পরবর্তীতে যখন কোন কোম্পনির IPO আসবে তখন আপনারা স্বাধীনভাবে নিজের সিদ্ধান্ত নিতে প্রস্তুত থাকবেন ।
Table of Contents
IPO কী?
IPO পুরো অর্থ হল Initial Public Offering ।
কোন কোম্পানি প্রথমবার যখন তাদের শেয়ার পাবলিককে ইস্যু করার জন্য অফার করে , তখন তাকে IPO বলে ।
সকলের বোঝার সুবিধার্থে চলুন তাহলে একটি উদাহরনের দ্বারা সমগ্র বিষয়টি বোঝার চেষ্টা করি-
ধরুন, আপনি একটি ধুপকাঠির কোম্পানি খুলেছেন।প্রথম অবস্থায় অর্থের জন্য পরিবারের লোকজন, আত্নীয়স্বজনদের কাছ থেকে কিংবা কোন ANGEL INVESTOR থেকে অর্থ নিয়ে কোম্পানি চালিয়েছিলেন। বর্তমানে আপনার ধুপকাঠির চাহিদা দিন দিন বেড়েই চলেছে সুতরাং চাহিদা অনুযায়ী উৎপাদনের জন্য প্রয়োজন নতুন কারখানা ও নতুন নতুন মেশিনারির । আপনার কোম্পানি পরিচালনার জন্য প্রয়োজন এখন প্রচুর অর্থের, এই অর্থের সংস্থানের জন্য আপনি যদি ব্যাঙ্কের কাছেও যান তাহলে আপনাকে প্রতি মাসে আসলের সাথে সুদ দিতে হবে আর অন্যদিকে আপনার কাছে সুযোগ রয়েছে আপনার কোম্পানির কিছু অংশ পাবলিকের উদ্দ্যেশ্য বিক্রি করে দিতে পারবেন অর্থাৎ আপনাকে স্টক এক্সচেঞ্জে নাম নথিভুক্ত করতে হবে ।আপনি যে সরাসরি আপনার কোম্পানির শেয়ার পাবলিককে অফার করছেন এটিই হল IPO।
IPO বিক্রির কাজটি ইনভেস্টমেন্ট ব্যাঙ্ক করে থাকে ।এই বিক্রি করার পদ্ধতি তিন থেকে দশ দিন পর্যন্ত হয়ে থাকে ।এই পদ্ধতি যেদিন শেষ হবে তার ঠিক ৩ দিনের মাথায় স্টক এক্সচেঞ্জে আপনার ধূপকাঠির কোম্পানির নাম নথিভুক্ত হয়ে যাবে ।
কোম্পানি কেন IPO নিয়ে আসে ?
কোম্পানি একাধিক কারনে IPO নিয়ে আসে । তবে যেই কারনেই নিয়ে আসুক তা SEBI কে জানাতে হবে । IPO নিয়ে আসার কারণগুলি হল –
i) ব্যাবসার বৃদ্ধির জন্য ।
ii) কোম্পানির নেওয়া কোন লোন শোধ করার জন্য ।
iii) পূর্ববর্তী কোন নিবেশক নিবেশ থেকে বের হওয়ার জন্য ।
কোম্পানির IPO কেনার জন্য কত ধরনের নিবেশক থাকে ?
কোম্পানির IPO কেনার জন্য সাধারনত চার ধরনের নিবেশক থাকে-
i) QUALIFIED INSTITUTIONAL BUYERS (QIB)
ii) NON INSTITUTIONAL INVESTORS (NII)
iii)ANCHOR INVESTORS
iv)RETAIL INVESTORS
আরও পড়ুন মিউচুয়াল ফান্ড কী ? কীভাবে বিনিয়োগ করবেন জেনে নিন সমস্ত খুঁটিনাটি
IPO কীভাবে কাজ করে?
সেবি আইপিও তে বিনিয়োগের পুরো প্রক্রিয়া নিয়ন্ত্রন করে । আইপিওয়ের মাধ্যমে শেয়ার ইস্যু করতে ইচ্ছুক একটি কোম্পানি প্রথমে সেবিতে রেজিস্টার করে । সেবির সমস্ত নথি যাচাই করার পর সঠিক মনে হলেই,তারপর এটি অনুমোদন করে ।
কোম্পানি সেবি দ্বারা অনুমোদন পেলে দুটি জিনিস সিদ্ধান্ত নেয়, একটি শেয়ারের মূল্যে এবং অন্যটি শেয়ারের সংখ্যা ।
শেয়ারের মূল্য দুই ধরনের পদ্ধতি দ্বারা নির্ধারণ করা হয়- একটি হল fixed price অন্যটি book building issue ।
Fixed price, নির্দিষ্ট মুল্য নির্ধারণ করা থাকে ।Book building issue তে একটি range থাকে । যা কখন ২০% বেশি না হয়।
উদাহরন হিসাবে আপনার ধূপকাঠি কোম্পানির আইপিও ফিক্সড প্রাইস দ্বারা নির্ধারণ হলে , প্রাইস হবে ১০০ টাকা কিন্ত যদি বুক বিল্ডিং ইস্যু দ্বারা নির্ধারণ হলে হবে ১০০-১০৫ টাকা ।
ইস্যুর ধরন সম্পর্কে কোম্পানি সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর কোম্পানি জনসাধারনের জন্য শেয়ারগুলি উপলব্ধ করে।বিনিয়গকারিরা তখন শেয়ার কেনার জন্য আবেদন জমা করেন ।
আইপিও জনসাধারন কেনার সময় লট অনুযায়ী আবেদন করবে। স্টকের মতো নিজের ইচ্ছা মতো স্টক বাই করতে পারবে না , লট আনুযায়ী আবেদন করতে হবে।বিভিন্ন কোম্পানির বিভিন্ন লট সাইজ হয়ে থাকে ।যেমন, কোন কোম্পনি ৫০ টি স্টক নিয়ে ১ লট করে, এবার কোন কোম্পানি ১০০ টি স্টক নিয়ে ১ লট করে অর্থাৎ আপনাকে লট আনুযায়ী আবেদন করতে হবে ।
পাবলিকের কাছে শেয়ার allotment হয়ে গেলে, পরবর্তী ধাপ হল স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্ত করা ।প্রাইমারি মার্কেটে বিনিয়োগকারীদের শেয়ার ইস্যু করার পর সেকেন্ডারি মার্কেটে তালিকাভুক্ত হয়।এই শেয়ারগুলো এরপর প্রতিদিন ট্রেড করতে পারবেন ।
IPO কেনার পদ্ধতি
আইপিও কেনার জন্য আপনার ডিম্যাট এবং ট্রেডিং অ্যাকাউন্ট অবশ্যই থাকতে হবে ।
দুইরকম পদ্ধতি তে আইপিও তে আবেদন করা যায় একটি হল NET BANKING অন্যটি UPI .
NET BANKING – এই পদ্ধতিতে আবেদন করতে চাইলে আপনাকে আপনার নেট বাঙ্কিং অ্যাকাউন্টে ই -সার্ভিসে গিয়ে যেই আইপিও কিনতে চাইছেন সেটা পছন্দ করার পর , কত্গুলো লট নেবেন সেই অনুযায়ী আবেদন করতে হবে ।আবেদন করার পর আপনি যতদিন না স্টক পাচ্ছেন,ততদিন যে পরিমান লট আবেদন করছেন সেই পরিমান টাকা ব্লক হয়ে থাকবে অর্থাৎ সেই পরিমান টাকা আপনি আর খরচ করতে পারবেন না ।
UPI – এই পদ্ধতিতে আবেদন করতে চাইলে আপনাকে আপনার ব্রোকারেরের অ্যাপ কিংবা ওয়েবসাইটে গিয়ে আবেদন করতে হবে। এর জন্য আপনার একটি UPI অ্যাকাউন্ট থাকতে হবে ।আপনি যেই আইপিও তে নিবেশ করবেন সেটা পছন্দ করার পর কত লট নেবেন সেটা দিতে হবে । এরপর সেই পরিমান টাকা আপনার ব্লক হয়ে যাবে যতদিননা আপনি অ্যালোটমেন্ট পাচ্ছেন ।
আইপিওতে বিনিয়োগের পূর্বে অবশ্যই সেই কোম্পানি সম্পর্কে ভালোমতো রিসার্চ করার পর বিনিয়োগ করুন।আজকের আলোচনাতে আইপিও সম্পর্কে সাধারন কিছু ধারনা দেওয়া হয়েছে যা আপনাদের আইপিও সম্পর্কে একটি প্রাথমিক ধারনা তৈরি হবে।
যদি অ্যাটিক্যালটি সত্যি ভালো লেগে থাকে, তাহলে অবশ্যই আটিক্যালটি শেয়ার করতে ভুলবেননা ।
এছাডা , আটিক্যাল সম্পর্কিত কোন ধরনের প্রশ্ন বা পরামর্শ থাকে নিচে কমেন্ট করে জানাবেন ।
Hi, I’m Pritam Saha. I have a passion for stocks and have spent my last 6+ years learning about the stock market. My Blog focuses on idea & concepts that improve the skills of the investor to manage their own money.
Pingback: NPS(National Pension System) কী? জেনে নিন পেনশন পাবার নিয়ম ও যোগ্যতা । - Share Bazar Blog
Pingback: স্টক মার্কেটের 25 টি গুরুত্বপূর্ন পরিভাষা - Share Bazar Blog