You are currently viewing পরীক্ষামূলক ভাবে 1লা ডিসেম্বর থেকেই চালু হচ্ছে ‘ডিজিটাল রুপি’র যাত্রা। কোন কোন শহর পাচ্ছে এই সুবিধা?

পরীক্ষামূলক ভাবে 1লা ডিসেম্বর থেকেই চালু হচ্ছে ‘ডিজিটাল রুপি’র যাত্রা। কোন কোন শহর পাচ্ছে এই সুবিধা?

১লা ডিসেম্বর থেকেই ‘ডিজিটাল রুপি’র যাত্রা শুরু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া। প্রাথমিকভাবে মুম্বাই, দিল্লি, বেঙ্গালুরু এবং ভুবনেশ্বরে এই পরিষেবা চালু হতে চলেছে। রিজার্ভ ব্যাঙ্কের তরফে জানান হয়েছে যে এই ডিজিটাল রুপি পাইলট প্রজেক্টটি আপাতত ক্লোজড ইউজার গ্রুপের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখা হবে। অর্থাৎ একটি নির্বাচিত শহরগুলির গ্রাহক এবং মার্চেন্টরাই এই পরিষেবার সুবিধা নিতে পারবেন। 

ডিজিটাল রুপির এই যাত্রা এগিয়ে নিয়ে যেতে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক মোট চারটি ব্যাঙ্ককে সঙ্গে নিয়ে চলার পরিকল্পনা করেছে। স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া, ICICI ব্যাঙ্ক, ইয়েস ব্যাঙ্ক এবং HDFC ফার্স্ট ব্যাঙ্ক। এর পরবর্তী পর্যায়ে ব্যাঙ্ক অফ বরোদা, ইউনিওন ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া, HDFC ব্যাঙ্ক ও কোটাক মাহিন্দ্রা এই চারটি ব্যাঙ্ক যুক্ত হবে।

কিভাবে লেনদেন করা যাবে ‘ডিজিটাল রুপি’র মাধ্যমে?

ডিজিটাল রুপিকে নগদ অর্থেরই একটি বিকল্প হিসেবে গ্রাহকদের হাতে তুলে দিতে চলেছে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। যে পণ্য বা পরিসেবা আপনি নগদ অর্থ দিয়ে ক্রয় করেন, সেটাই এখন থেকে ডিজিটাল মুদ্রা দিয়ে করতে পারবেন। ব্যাঙ্ক থেকে যে নোট পাওয়া যায়, তারই ডিজিটাল রুপ এই মুদ্রা। সমগ্র দেশে এই মুদ্রার ভ্যালু নগদ অর্থের সমানই থাকবে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই  ই-রুপি চালু হলে দেশে নগদ অর্থের প্রবাহ অনেকটাই কমবে। 

রিজার্ভ ব্যাঙ্ক জানিয়েছে, নির্বাচিত চারটি ব্যাঙ্কের মাধ্যমে ডিজিটাল মুদ্রা ছাড়ার কাজ শুরু হবে। ডিজিটাল ওয়ালেট ব্যবহারের মাধ্যমে গ্রাহকেরা এই মুদ্রার লেনদেন সাড়তে পারবেন। এই ই-রুপি পেপার নোটেরই সমতুল্য। ব্যাক্তি থেকে মার্চেন্ট এবং ব্যাক্তি থেকে ব্যাক্তি উভয় প্রকার লেনদেনই ডিজিটাল ওয়ালেটের মাধ্যমে গ্রাহকেরা করতে পারবেন। 

পেপার নোট বা কয়েনের পরিবর্তে ব্যাঙ্ক থেকে আপনি ডিজিটাল রুপি পেতে পারেন। এখন সেই ই-রুপি ডিজিটাল ওয়ালেটে জমিয়ে রাখতে পারবেন। আপনার ফোনের মাধ্যমে কিউআর কোড স্ক্যান করে আপনি নিজের বিল পে করতে পারবেন। সাধারণ টাকার মত এটিও লেনদেনের একটি বিশ্বাসযোগ্য মাধ্যম। কেননা এটি রিজার্ভ ব্যাঙ্কের দ্বারা লঞ্চ করা মুদ্রা। 

ডিজিটাল রুপি

লক্ষ্য কি এই পাইলট প্রকল্পের?

রিয়েল টাইমে ডিজিটাল রুপি চালু করা, বাজারে ছড়িয়ে দেওয়া এবং খুচরো বাজারে ব্যবহারের সম্পূর্ণ প্রক্রিয়াটি পরীক্ষা করে দেখাই এই পাইলট প্রজেক্টের প্রধান লক্ষ্য। বাজারে ব্যবহৃত কয়েন বা পেপার নোট যে যে মূল্যে জারি করা আছে, সেই একই মূল্যের ই-রুপি বাজারে আনা হবে বলে জানা গেছে। মোবাইল ফোনের পাশাপাশি অন্যান্য স্মার্ট ডিভাইসেও এই মুদ্রা রাখা যাবে। আরবিআই এর বিজ্ঞপ্তি থেকে জানা যায় প্রাথমিক ভাবে চারটি শহরে শুরু করা হলেও ধীরে ধীরে এর পরিধি আরো বাড়ানো হবে। এর পরবর্তী সময়ে গ্যাংটক, গুয়াহাটি, কোচি, লখনউ, হায়দ্রাবাদ, আহমেদাবাদ, পাটনা, ইন্দোর এবং সিমলার মত শহরেও এই পরিষেবা চালু করা হবে। প্রয়োজন অনুসারে আরো ব্যাঙ্ক বা অন্য শহরকেও অন্তর্ভুক্ত করা হতে পারে। 

ই-রুপি ব্যবহারে গ্রাহকেরা কি কি সুবিধা পাবেন?

ই-রুপি ব্যবহারের সব চাইতে বড় সুবিধাই হল যে আপনি ইন্টারনেট ছাড়াও এই ই-রুপির লেনদেন করতে পারবেন। 

ই-রুপি ব্যবহারের ফলে বিদেশে টাকার আদান প্রদানের ক্ষেত্রে বড় সুবিধা পাবেন।

ই-রুপি ব্যবহারের জন্য গ্রাহকের কোন রকম ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট  বা আধার নম্বরের প্রয়োজনীয়তা নেই। এক্ষেত্রে লেনদেনের জন্য কেবল আপনার ফোন নম্বরটিই যথেষ্ট। 

প্রচলিত কাগজের নোট ব্যবহারের ক্ষেত্রে একটি বড় সমস্যা জাল নোট। রিজার্ভ ব্যাঙ্কের মতে ডিজিটাল মুদ্রা ব্যবহারের ফলে এই সমস্যা থেকে প্রায় সম্পূর্ণ মুক্তি পাওয়া সম্ভব। 

পেপার নোট দীর্ঘদিন ব্যবহারের ফলে পুরনো হয়ে গেলে তা ব্যবহারের অযোগ্য হয়ে পড়ে। ডিজিটাল কারেন্সি এই সমস্যার ক্ষেত্রেও মোক্ষম সমাধান হিসেবে ধরা দেবে বলে আশা করা যাচ্ছে। 

ক্যাশ টাকা লেনদেনের প্রচলন ক্রমেই কমতে শুরু করবে। কেননা আজাকাল ক্যাশ টাকা পকেটে নিয়ে ঘোরা আসলেই একটি ঝুঁকির ব্যাপার। ডিজিটাল মুদ্রা ব্যবহারে এই ঝুঁকি থেকে অনেক খানি মুক্তি মিলবে।

আরো পড়ুন – বুক সামারি: ইন্টেলিজেন্ট ইনভেস্টর

গ্রাহকেরা কোন অসুবিধার সম্মুখীন হতে পারেন কি?

ই-রুপি ব্যবহারে তেমন গুরুতর কোন অসুবিধার কথা বলা হচ্ছে না ঠিকই। তবে অসুবিধা যে একেবারেই নেই, তেমনটাও নিশ্চিত করে বলা যায় না। অনেকেই মনে করছেন, যেহেতু ই-রুপি ওয়ালেটে কোন সুদের ব্যবস্থা নেই তাই ই-রুপির ক্ষেত্রে এটি একটি অসুবিধা। 

ধরুন আপনি ডিজিটাল ওয়ালেটে ১ লক্ষ টাকা রেখেছেন এবং তার জন্য আপনি কোন সুদ পাচ্ছেন না। অথচ সেই একই পরিমাণ টাকা ব্যাঙ্কে নগদ অর্থ হিসেবে রেখে নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা সুদ হিসেবে পাচ্ছেন। তাহলে ভেবে দেখুন আপনি কি ডিজিটাল ওয়ালেটে টাকা রাখবেন নাকি সেই টাকা ব্যাঙ্কে রাখবেন? উত্তর খুব সহজ। আপনি অবশ্যই ব্যাঙ্কে টাকা রাখবেন। 

যদিও এক্ষেত্রে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের তরফে জানানো হয়েছে যে একই পরিমাণ সুদ যদি ডিজিটাল ওয়ালেটে দেওয়া হয় তাহলে গ্রাহকেরা তাদের নগদ অর্থ ব্যাঙ্ক থেকে তুলে সবটাই ডিজিটাল মুদ্রায় বদলে ফেলতে আগ্রহী হতে পারে। ফলে নগদ অর্থের সঙ্গে ডিজিটাল কারেন্সির ভারসাম্য নষ্ট হবে। 

এছাড়া যে সকল ব্যক্তি ডিজিটাল মাধ্যম ব্যবহারে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন না, বিশেষত বয়স্ক ব্যক্তিরা, তাদের ক্ষেত্রে এই মুদ্রা ব্যবহার খানিকটা সমস্যার বিষয়ই বটে।

Source – RBI

আরো পড়ুন 👇

ভারতে প্রথম ডিজিটাল মুদ্রা সম্পর্কে জানুন ।

ক্রিপ্টোকারেন্সি কী ?

প্রাইস অ্যাকশন স্ট্যাটেজির ফুল কোর্স বিনামূল্যে

Leave a Reply