PPF (পাবলিক প্রভিডেন্ট ফান্ড) অত্যন্ত জনপ্রিয় একটি বিনিয়োগ বিকল্প।ন্যাশনাল সেভিংস অরগাইজেশন কর্তৃক ১৯৬৮ সালে প্রথমবার চালু করা হয় PPF (পাবলিক প্রভিডেন্ট ফান্ড).।এতে সুদের হার বেশি তার অপর ভারতীয় আয়কর আইন অনুযায়ী ৮০সি তে কর ছাড় পাওয়া যায় । ১৫ বছরের লক ইন পিরিয়ডে খোলা হয় পিপিএফ অ্যাকাউন্ট । পিপিএফ অ্যাকাউন্ট কারা খুলতে পারে ? পিপিএফ অ্যাকাউন্ট কত টাকা কর ছাড়ের সুবিধা থাকে ? সুদের হার কত ? চলুন জেনে নেওয়া যাক, PPF অ্যাকাউন্ট সম্বন্ধে কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য।
Table of Contents
PPF (পাবলিক প্রভিডেন্ট ফান্ড) সম্পর্কে জানতে এই বিষয়গুলি আগে জেনে নিন:
বয়সসীমার যোগ্যতামানঃ
পিপিএফ অ্যাকাউন্ট খোলার জন্য কোন নির্দিষ্ট বয়সসীমা নেই। আপনি যে কোন বয়স থেকে শুরু করতে পারেন। তবে আপনার বয়স ১৮ বছরের নীচে হলে পিতামাতা, পিতামাতার অবর্তমানে ঠাকুরদা কিংবা ঠাকুরমা কে অভিভাবক করে অ্যাকাউন্ট খুলতে পারবেন ।
বিনিয়োগের যোগ্যতাঃ
বিনিয়োগের জন্য আপনাকে ভারতীয় নাগরিক হতে হবে । আপনি NRI ( Non resident individual) হলে নতুন করে অ্যাকাউন্ট খুলতে পারবেন না তবে পুরনো অ্যাকাউন্ট থাকলে সেটি চালিয়ে যেতে পারবেন ।
বিনিয়োগ সীমাঃ
আপনি বছরে নিন্মতম ৫০০ টাকা থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ ১.৫ লাখ টাকা পর্যন্ত রাখতে পারবেন । বছরে সর্বোচ্চ ১২ টা কিস্তি তে টাকা জমা করতে পারবেন ।কোন কারনে আপনার কোন বছরে যদি টাকা জমা করতে না পারেন তাহলে সেই বছরে অন্তত ৫০০ টাকার সাথে ৫০ টাকা পেনাল্টি জমা করতে হবে ।
বিনিয়োগের সঠিক সময়ঃ
প্রতি মাসের ৫ তারিখের মধ্যে আপনি যদি মাসের কিস্তি দিয়ে দেন তাহলে পুরো মাসের সুদ পাবেন। আপনি যদি প্রতি মাসে ৫ তারিখ মনে রেখে কিস্তি দিতে অসুবিধা হয় তাহলে এপ্রিল মাসে ৫ তারিখের মধ্যে সব টাকা একবারে জমা করলে পুরো বছরের সুদ একবারে পেয়ে যাবেন ।
মেয়াদঃ
PPF (পাবলিক প্রভিডেন্ট ফান্ড) অ্যাকাউন্টের লক ইন পিরিয়ড থাকে ১৫ বছরের জন্য । তারপর আপনি চাইলে ১ থেকে ৫ বছর করে মেয়াদ বাড়াতে পারবেন, বিনিয়োগ করা ছাড়াই ।১৫ বছর পূর্ণ হবার পর তারপর মেয়াদ বৃদ্ধি করতে চাইলে ফর্ম H ফিলাপ করে জমা করতে হবে ।
প্রয়োজনীয় কাগজপত্রঃ
PPF অ্যাকাউন্ট খোলার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্রগুলো হল –
i) ফ্রম A
ii) পরিচয়পত্র হিসাবে- আধার কার্ড/ ভোটার কার্ড / ড্রাইভিং লাইসেন্স
iii) ঠিকানার প্রমানপত্র হিসাবে- প্যান কার্ড/ইলেকট্রিক বিল/ফোনের বিল
iv) পাসপোর্ট সাইজ ফটো
v) নমিনির জন্য ফ্রম E
লোন এবং টাকা তোলাঃ
PPF অ্যাকাউন্ট খোলার তৃতীয় অর্থবর্ষ থেকে ষষ্ঠ অর্থবর্ষ পর্যন্ত আপনি লোন তোলার সুবিধা পাবেন। লোনের সুদের হার হবে আপনার পিপিএফ অ্যাকাউন্টের সুদের হার যেটা রয়েছে তার থেকে ২% বেশি হবে ।
সপ্তম অর্থবর্ষ থেকে আপনি টাকা তোলার সুবিধা পাবেন , বছরে একবার এবং ২৫% এর মধ্যে ।
আয়কর ছাড়ঃ
PPF বছরে ১.৫ লাখ পর্যন্ত ৮০সি তে কর ছাড়ের সুবিধা দেয় । ম্যাচুরিটির ওপর সম্পূর্ণ করমুক্ত থাকে ।
আরো পড়ুন ELSS ফান্ড কী এবং ELSS ফান্ডে বিনিয়োগ করার কি কি সুবিধা আছে?
অসময়ে টাকা তোলার সুবিধাঃ
অ্যাকাউন্ট হোল্ডার কিংবা তার পরিবার যদি গুরুতর অসুস্থ হয় অথবা উচ্চ শিক্ষার জন্য টাকার প্রয়োজন হলে, সঠিক প্রমান দিতে পারলে, অ্যাকাউন্টের বয়স ৫ বছর হলে টাকা তুলতে পারবেন ।
নমিনিঃ
একজন পিপিএফ হোল্ডার সর্বোচ্চ ৪ জন নমিনি করতে পারবেন এবং পরিবর্তন করার সুযোগ পাবেন ।নমিনির নাম যুক্ত করতে ফরম E ফিলাপ করতে হবে এবং নাম পরিবর্তন করতে F ফরম ফিলাপ করতে হবে ।
অ্যাকাউন্ট ট্যান্সফারঃ
আপনার চাকরি স্থান পরিবর্তন কিংবা শহর পরিবর্তন করলে আপনি আপনার অ্যাকাউন্ট এক ব্রাঞ্চ থেকে অন্য ব্রাঞ্চ, পোস্ট আফিস থেকে ব্যাংঙ্ক কিংবা ব্যাংঙ্ক থেকে পোস্ট অফিস করতে পারবেন, তার জন্য ব্যাংক অথবা পোস্ট অফিস যেখান থেকে পরিবর্তন করবেন সেখানে জানাতে হবে ।
সুদের হারঃ
প্রতি অর্থবষে সুদের হার পরিবর্তন হয়। ২০২১-২০২২ সুদেরহার ৭.১% রয়েছে।সুদ প্রদান করা হয় চক্রবৃদ্ধি সুদের হারে।প্রতিমাসেই সুদের হিসাব করা হয় কিন্ত সুদ ৩১ মার্চ অ্যাকাউন্টে জমা করে ।
আমানতের ধরনঃ
PPF অ্যাকাউন্টে বিনিয়োগ সহজ এবং সুবিধাজনক। বিনিয়োগের বিভিন্ন পদ্ধতি রয়েছে যার মধ্যে নগদ, চেক, ডিডি, পিও বা অনলাইন তহবিল প্রভৃতির মাধ্যমে আপনি টাকা জমা করতে পারবেন ।
আরো পড়ুন NPS(National Pension System) কী? জেনে নিন পেনশন পাবার নিয়ম ও যোগ্যতা ।
PPF (পাবলিক প্রভিডেন্ট ফান্ড) অ্যাকাউন্টের সুবিধাঃ
পিপিএফ (পাবলিক প্রভিডেন্ট ফান্ড) খুবই জনপ্রিয় একটি বিনিয়োগ মাধ্যম।পিপিএফ (পাবলিক প্রভিডেন্ট ফান্ড) অ্যাকাউন্টের সুবিধাগুলি হল –
i) কার্যকর দীর্ঘমেয়াদী বিনিয়োগ প্রকল্পঃ
কার্যকর দীর্ঘমেয়াদী বিনিয়োগের জন্য একটি সুরক্ষিত লাভজনক মাধ্যম হল পিপিএফ (পাবলিক প্রভিডেন্ট ফান্ড)।এই প্রকল্পের টাকা জমা করার সময়সীমা হল ১৫ বছর এবং আপনি চাইলে ৫ বছর করে সময়সীমা বৃদ্ধি করতে পারবেন। ১৫ বছরের পর পাঁচ বছর টাকা না জমা করেও সুদের লাভ নিতে পারবেন ।
ii) পাবলিক প্রভিডেন্ট ফান্ড রিটার্ন গুলো করমুক্তঃ
পাবলিক প্রভিডেন্ট ফান্ডে নতুন বই খোলা থেকে শুরু করে ম্যাচুরিটি পর্যন্ত কোন রকম করের প্রয়োজন হয়না । সম্পুর্নভাবে করমুক্ত একটি বিনিয়োগ প্রকল্প।
iii) অবসরগ্রহন পরিকল্পনা উপকারিঃ
PPF ফান্ডটি অবসর গ্রহনের জন্য একটি সুনিশ্চিত একটি প্রকল্প। এটি ১৫ বছর পর্যন্ত লক ইন থাকে তারপর ৫ বছর করে বাড়াতে পারবেন। এছাড়াও নতুন করে আরেকটিও অ্যাকাউন্ট খুলতে পারবেন ।
iv) কম ঝুঁকিপুর্ণ পিপিএফ অ্যাকাউন্টঃ
PPF (পাবলিক প্রভিডেন্ট ফান্ড) এটি খুবই কম ঝুঁকিপূর্ণ এবং লাভজনক রিটার্ন সুনিশ্চিত করে ।
v) সহজে গ্রহনঃ
PPF অ্যাকাউন্ট খোলা খুবই সহজ। যেকোন সরকারি ব্যাংক , পোস্ট অফিস এবং নির্বাচিত কিছু প্রাইভেট ব্যাঙ্ক এই পরিষেবা দেয় । কিছু কিছু ব্যাঙ্ক অনলাইনে এই পরিষেবা দেয় ।
আজকের অ্যাটিক্যালে পাবলিক প্রভিডেন্ট ফান্ড সম্পর্কে সাধারন কিছু বিষয় নিয়ে আলোচনা করলাম । আশা করছি এই অ্যাটিক্যালটি পড়ে আপনাদের উপকারে আসবে। পাবলিক প্রভিডেন্ট ফান্ড সম্পর্কে আরো বিস্তারিত জানতে www.nsiindia.gov.in এই ওয়েবসাইটে ভিজিট করতে পারেন ।
যদি অ্যাটিক্যালটি পড়ে ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই শেয়ার করতে ভুলবেন না ।
Hi, I’m Pritam Saha. I have a passion for stocks and have spent my last 6+ years learning about the stock market. My Blog focuses on idea & concepts that improve the skills of the investor to manage their own money.
Pingback: আপনার সন্তানের সুরক্ষিত ভবিষ্যতের জন্য বিনিয়োগ নিয়ে ভাবছেন। দেখে নিন 5টি বিনিয়োগ পরিকল্পনা -